দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সম্ভাব্য দেশে প্রত্যাবর্তনকে ঘিরে। দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ সম্প্রতি এই গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নিশ্চিত করেছেন, যা দলের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে নতুন এক উদ্দীপনা ও প্রত্যাশার জন্ম দিয়েছে। এই ঘোষণা বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক গতিপ্রকৃতির ওপর গভীর প্রভাব ফেলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের পর ঘোষণা
সোমবার (১ ডিসেম্বর) রাতে অনুষ্ঠিত দলের স্থায়ী কমিটির এক বিশেষ এবং গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সালাউদ্দিন আহমেদ এই আশাব্যঞ্জক বার্তা দেন। তিনি জানান যে, অন্যান্য নিয়মিত বৈঠকের মতোই এটি অনুষ্ঠিত হলেও, বেশ কয়েকটি সংবেদনশীল ও কৌশলগত বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। এই বৈঠকটি বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বিএনপির কর্মপন্থা নির্ধারণে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ছিল।
খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য ও অন্যান্য আলোচনা
বৈঠকের অন্যতম প্রধান আলোচ্য বিষয় ছিল কারাবন্দী ও অসুস্থ বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বর্তমান স্বাস্থ্য পরিস্থিতি। তার শারীরিক অবস্থা নিয়ে দলের গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয় এবং এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য ও আপডেট দেওয়ার জন্য দলের অন্যতম শীর্ষ নেতা ডা. এ জেড এম জাহিদকে দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছে। বেগম জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে দলের অব্যাহত উৎকণ্ঠা এবং তার দ্রুত আরোগ্য লাভের আকাঙ্ক্ষা এই আলোচনার মাধ্যমে প্রতিফলিত হয়।
এছাড়াও, বৈঠকে দেশের সমসাময়িক রাজনৈতিক পরিস্থিতি, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপির কৌশলগত প্রস্তুতি এবং সাংগঠনিক কার্যক্রমে গতিশীলতা আনয়নের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়সমূহ বিস্তারিতভাবে আলোচিত হয়। সালাউদ্দিন আহমেদ নিজেই এসব আলোচনার বিষয়বস্তু সম্পর্কে সাংবাদিকদের অবহিত করেন, যা দলের ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনার একটি স্পষ্ট চিত্র তুলে ধরে।
তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তনে আইনগত বাধা নেই
তারেক রহমানের সম্ভাব্য প্রত্যাবর্তনের এই ঘোষণা এমন এক সময়ে এলো যখন এর আগে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন একটি গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেছিলেন। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন যে, তারেক রহমানের দেশে ফেরার ক্ষেত্রে কোনো আইনি বাধা নেই এবং প্রয়োজনীয় ট্রাভেল পাস একদিনের মধ্যেই ইস্যু করা সম্ভব। পররাষ্ট্র উপদেষ্টার এই বক্তব্য তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তনের পথকে আরও সুগম ও বাস্তবসম্মত করে তোলে এবং এর সম্ভাব্যতাকে অনেকখানি বাড়িয়ে দেয়।
এই সামগ্রিক পরিস্থিতি ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা হতে পারে, যেখানে বিএনপির সাংগঠনিক কাঠামো এবং রাজনৈতিক কৌশল নতুন মাত্রা পেতে পারে।
