More

    মাতৃত্বকালীন ভাতা অনলাইন আবেদন ২০২৬- গর্ভবতী ভাতা অনলাইন আবেদন

    আপনি কি ২০২৬ সালের মাতৃত্বকালীন ভাতার জন্য অনলাইনে আবেদন করার প্রক্রিয়া জানতে চান? যদি আপনার উত্তর হ্যাঁ হয়, তাহলে আপনি সঠিক স্থানে এসেছেন। আজকের পোস্টে আমরা বিস্তারিতভাবে দেখব কিভাবে গর্ভবতী ভাতার জন্য অনলাইনে আবেদন করা যায় এবং প্রতি মাসে কত টাকা ভাতা পাওয়া যায়।

    গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সমাজসেবা অধিদপ্তর সমাজের অসহায় ও দরিদ্র গর্ভবতী মহিলাদের জন্য মাতৃত্বকালীন ভাতা চালু করেছে। এই ভাতা মূলত তাদের জন্য প্রযোজ্য যারা আর্থিকভাবে স্বচ্ছল নয় এবং বাড়ি বা আয়ের কোনো স্থায়ী উৎস নেই। তবে সরকারি চাকরিজীবী বা ধনী মহিলাদের জন্য এই ভাতা প্রযোজ্য নয়।

    আপনি যদি একজন অসহায় ও দরিদ্র গর্ভবতী মহিলা হন, অথবা আপনার সন্তান, বোন বা পরিচিত কেউ গর্ভবতী হয়ে থাকেন, তাহলে মাতৃত্বকালীন ভাতার জন্য আবেদন করতে পারেন। এই পোস্টে আমরা দেখব কীভাবে আবেদন করতে হবে, কোন কোন কাগজপত্র লাগবে এবং প্রতি মাসে কত টাকা ভাতা দেওয়া হয়। চলুন শুরু করি এবং পুরো প্রক্রিয়াটি ধাপে ধাপে জানি।

    মাতৃত্বকালীন ভাতা অনলাইন আবেদন ২০২৬

    গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সমাজসেবা অধিদপ্তর অসহায় ও হতদরিদ্র গর্ভবতী মহিলাদের জন্য মাতৃত্বকালীন ভাতা চালু করেছে। তাই অনেক গর্ভবতী মহিলা এই ভাতা পাওয়ার জন্য আবেদন করতে আগ্রহী, তবে অনেকে ঠিকভাবে জানেন না কিভাবে আবেদন করতে হয়।

    আপনি চাইলে অনলাইনে নিজে আবেদন করতে পারেন অথবা আশেপাশের কোনো কম্পিউটার দোকান থেকে আবেদন করতে পারেন। তবে কম্পিউটার দোকান ব্যবহার করলে অতিরিক্ত খরচের টাকা দিতে হতে পারে।

    নাম দিয়ে জন্ম নিবন্ধন যাচাই করার উপায়: বিস্তারিত তথ্য

    গর্ভবতী ভাতা আবেদন করতে হলে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে ভিজিট করতে হবে। আবেদন করতে এই লিঙ্কটি ব্যবহার করুন: http://103.48.16.6:8080/LM-MIS/applicant/onlineRegistration

    আবেদন ফরমে প্রয়োজনীয় তথ্য পূরণ করার পর আপনি অনলাইনে PDF ফাইল ডাউনলোড করতে পারবেন। এরপর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বা পৌরসভার মেয়রের অনুমতি পত্র নিয়ে উপজেলা মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে জমা দিতে হবে।

    মাতৃত্বকালীন ভাতা পাওয়ার শর্তাবলী

    যদি আপনি সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে মাতৃত্বকালীন ভাতা পেতে চান, তবে কিছু নির্দিষ্ট শর্ত পূরণ করা বাধ্যতামূলক। এই শর্তাবলী না মানলে আপনি ভাতা পাওয়ার যোগ্য হবেন না। তাই মাতৃত্বকালীন ভাতার জন্য আবেদন করার আগে অবশ্যই এগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানা প্রয়োজন। শর্তগুলো নিম্নরূপ:

    • বয়স অবশ্যই ২০ বছরের ঊর্ধ্বে হতে হবে।
    • এটি প্রথম অথবা দ্বিতীয় সন্তান গর্ভধারণের জন্য প্রযোজ্য।
    • মাসিক আয় ১৫০০ টাকার কম হতে হবে।
    • আবেদিকার বসতবাড়ি থাকতে হবে অথবা অন্যের জমিতে বাস করতে হবে।
    • আবেদিকার বা পরিবারের নিজের কৃষি জমি বা পুকুর থাকতে পারবে না।
    • আবেদনকারীর অবশ্যই গর্ভবতী হওয়া জরুরি।
    • হতদরিদ্র এবং প্রতিবন্ধী মায়ের আবেদনকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।

    আপনি যদি মাতৃত্বকালীন ভাতার জন্য আবেদন করতে চান, তাহলে প্রথমে উপরের শর্তগুলো ভালোভাবে পড়ে নিন। যদি মনে হয় যে আপনার অবস্থা শর্তগুলোর সাথে মিলে যায়, তাহলে আপনি আবেদন করতে পারেন। আর যদি শর্তাবলির সাথে আপনার অবস্থা মিল না খায়, তাহলে আবেদন না করাই উত্তম, কারণ এ ক্ষেত্রে আবেদন করলেও ফলাফল লাভজনক হবে না।

    মাতৃত্বকালীন ভাতা পেতে কি কি লাগবে

    যদি আপনি অনলাইনে মাতৃত্বকালীন ভাতার জন্য আবেদন করতে চান, তবে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র আগে থেকে সংগ্রহ করা আবশ্যক। আবেদন করার আগে সকল তথ্য প্রস্তুত রাখলে প্রক্রিয়াটি দ্রুত এবং সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা যায়। গর্ভবতী ভাতার জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টগুলো নিচে দেওয়া হলো:

    • পাসপোর্ট সাইজের দুই কপি রঙিন ছবি
    • উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তার দ্বারা প্রদত্ত গর্ভবতী সনদপত্র
    • জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি
    • ইউনিয়ন পরিষদের নাগরিকত্ব সনদপত্র
    • ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তার প্রদত্ত সনদপত্র
    • টিকা গ্রহণের কার্ড
    • টাকা গ্রহণের জন্য ব্যাংক একাউন্ট নম্বর বা বিকাশ, রকেট, নগদ সংক্রান্ত তথ্য

    উপরোক্ত সব ডকুমেন্ট আবেদন করার আগে অবশ্যই প্রস্তুত করুন। এই সকল কাগজপত্র সঠিক এবং সত্যনিষ্ঠ হতে হবে। ভুল বা ভুয়া তথ্য দেওয়ার ফলে আপনার আবেদন বাতিল হতে পারে।

    গর্ভবতী ভাতা অনলাইন আবেদন করার নিয়ম

    এতক্ষণ আমরা মাতৃত্বকালীন ভাতা পাওয়ার যোগ্যতা, শর্তাবলী এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সম্পর্কে জানলাম। এখন দেখা যাক, কিভাবে অনলাইনে গর্ভবতী ভাতার জন্য আবেদন করা যায়।

    ১. অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন
    প্রথমে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে যান:
    http://103.48.16.6:8080/LM-MIS/applicant/onlineRegistration

    ২. ব্যক্তিগত তথ্য পূরণ করুন
    আবেদনের জন্য নিচের তথ্যগুলো যথাযথভাবে দিন:

    • অর্থবছর
    • জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর
    • জন্ম তারিখ
    • আবেদনকারীর নাম
    • পিতার নাম
    • মাতার নাম
    • স্বামীর নাম
    • ব্যাচ
    • যে নামে পরিচিত
    • জন্মস্থান
    • ধর্ম
    • মোবাইল নম্বর
    • শিক্ষাগত যোগ্যতা
    • রক্তের গ্রুপ
    • বৈবাহিক অবস্থা

    ৩. বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা
    বর্তমান এবং স্থায়ী ঠিকানার তথ্য দিন:

    • বাড়ি/গ্রাম
    • রাস্তা/ব্লক/সেক্টর
    • বিভাগ, জেলা, উপজেলা/ইউনিয়ন
    • ওয়ার্ড নং
    • পোস্ট কোড

    যদি বর্তমান ঠিকানা এবং স্থায়ী ঠিকানা একই হয়, তাহলে “একই ঠিকানা” অপশনে টিক দিন। আলাদা হলে, আলাদা ঠিকানার তথ্য লিখুন।

    ৪. আর্থ-সামাজিক তথ্য
    পরিবার এবং আর্থ-সামাজিক তথ্য পূরণ করুন:

    • পরিবারের প্রধান রোজগারী মহিলা (হ্যাঁ/না)
    • মাসিক আয়
    • প্রতিবন্ধী (হ্যাঁ/না)
    • বাসস্থান আছে কি না (হ্যাঁ/না)
    • কৃষি জমি/পুকুর আছে কি না (হ্যাঁ/না)
    • বয়স
    • গর্ভধারণ ক্রম (প্রথম/দ্বিতীয়)

    ৫. পেমেন্টের তথ্য
    আপনি ব্যাংকিং বা মোবাইল ব্যাংকিং যেকোনো একটি পদ্ধতি বেছে নিতে পারেন:

    • ব্যাংক: ব্যাংক অপশন সিলেক্ট করে ব্যাংকের নাম, অ্যাকাউন্ট ধারীর নাম এবং একাউন্ট নম্বর লিখুন।
    • মোবাইল ব্যাংকিং: বিকাশ, রকেট বা নগদ যে কোনো একটি বেছে নিয়ে অ্যাকাউন্ট ধারীর নাম এবং নম্বর লিখুন।

    ৬. ছবি ও স্বাক্ষর আপলোড করুন

    • ছবি: ৩০০×৩০০ পিক্সেল
    • স্বাক্ষর/টিপসই স্বাক্ষর: ৩০০×১৮০ পিক্সেল

    আগে থেকে তৈরি করা ছবি এবং স্বাক্ষর আপলোড করে “সংরক্ষণ করুন” অপশনে ক্লিক করুন।

    এতে আপনার আবেদন সম্পূর্ণ হয়ে যাবে।

    মাতৃত্বকালীন ভাতা আবেদন ফরম

    এ পর্যন্ত আমরা শিখেছি কিভাবে অনলাইনের মাধ্যমে মাতৃত্বকালীন বা গর্ভবতী ভাতার জন্য আবেদন করা যায়। এখন দেখা যাক কিভাবে হাতে লিখে বা অফলাইনে এই ভাতার জন্য আবেদন করা যায়।

    গর্ভবতী ভাতা আবেদন ফরম বিনামূল্যে পাওয়া যাবে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তার কাছ থেকে।

    ফরমে অনলাইনে যে সকল তথ্য পূরণ করেছি, সেগুলো ঠিক তেমনই হাতে লিখে পূরণ করতে হবে। এরপর, আপনার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বা পৌরসভার মেয়রের অনুমোদন নিয়ে আবেদন ফরম গ্রহণ করতে হবে। সবশেষে, পূরণকৃত ফরম উপজেলা মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে জমা দিতে হবে।

    উপসংহার

    সম্মানিত পাঠকগণ, আজকের পোস্টে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করেছি মাতৃত্বকালীন বা গর্ভবতী ভাতা পাওয়ার যোগ্যতা, প্রয়োজনীয় নথিপত্র, অনলাইন আবেদন প্রক্রিয়া এবং মাসিক কত টাকা ভাতা দেওয়া হয় ইত্যাদি। যদি আপনি একজন অসহায় বা দুস্থ গর্ভবতী নারী হন, অথবা আপনার পরিবারের বা পরিচিত কারও জন্য এটি প্রযোজ্য হয়, তাহলে উল্লিখিত নির্দেশনাগুলো অনুসরণ করে আজই আবেদন করতে পারেন।

    আপনি যদি পুরো পোস্টটি মনোযোগ দিয়ে পড়ে থাকেন, আমি বিশ্বাস করি আপনার অন্তত সামান্য হলেও উপকার হয়েছে। পোস্টটি পড়ে যদি আপনার ভালো লাগে, তবে বন্ধু ও পরিচিতদের সঙ্গে শেয়ার করতে ভুলবেন না। আজকের আলোচনাটি এখানেই শেষ করছি। সবাই সুস্থ ও ভালো থাকুন। আল্লাহ হাফেজ।

    Recent Articles

    Related Stories

    Leave A Reply

    Please enter your comment!
    Please enter your name here