More

    ৪৩তম বিসিএস: চাকরি হারালেন তিন সহকারী কমিশনার, প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ নেই কারণ

    জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কর্তৃক এক তাৎপর্যপূর্ণ সিদ্ধান্তের মাধ্যমে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিসিএস) প্রশাসন ক্যাডারের বুনিয়াদি প্রশিক্ষণে থাকা তিন শিক্ষানবিশ সহকারী কমিশনারকে সরকারি চাকরি থেকে অপসারণ করা হয়েছে। গত বুধবার (তারিখ উল্লেখ থাকলে ভালো হতো, তবে মূল লেখায় নেই, তাই এড়িয়ে যাচ্ছি) প্রকাশিত এক প্রজ্ঞাপনে তাঁদের নিয়োগ বাতিলের ঘোষণা দেওয়া হয়। এই আকস্মিক পদক্ষেপ প্রজাতন্ত্রের কর্মে নবীন কর্মকর্তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

    অপসারিত কর্মকর্তাদের পরিচয় ও কর্মপরিধি

    যাদের চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে, তাঁরা হলেন: কাজী আরিফুর রহমান (ফরিদপুর), অনুপ কুমার বিশ্বাস (বগুড়া) এবং নবমিতা সরকার (পিরোজপুর)। এই তিনজনই নিজ নিজ কর্মস্থলে সহকারী কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন এবং একইসঙ্গে সাভারের লোকপ্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে (BPATC) তাঁদের বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ চলছিল। প্রশিক্ষণ চলাকালীন সময়েই এই সরকারি আদেশ তাঁদের কাছে পৌঁছায়, যা তাঁদের ভবিষ্যতের ওপর গুরুতর প্রভাব ফেলবে।

    আইনগত ভিত্তি ও সরকারি বিধিমালা

    জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস নিয়োগ বিধিমালা, ১৯৮১ এর বিধি ৬(২)(এ) অনুযায়ী তাঁদের সরকারি চাকরি থেকে অবসান ঘটানো হয়েছে। এই বিধিমালা অনুযায়ী, কোনো শিক্ষানবিশ কর্মকর্তাকে যদি তাঁর শিক্ষানবিশির মেয়াদে ‘সরকারি চাকরিতে বহাল থাকার অযোগ্য’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়, তবে সরকারি কর্ম কমিশনের (PSC) পরামর্শ ছাড়াই তাঁর নিয়োগ বাতিল করার ক্ষমতা সরকারের রয়েছে। এই বিধিটি মূলত probationary period-এর অধীনে থাকা কর্মকর্তাদের কর্মদক্ষতা ও আচরণ মূল্যায়নের জন্য তৈরি।

    কারণ অস্পষ্টতা ও ব্যক্তিগত প্রতিক্রিয়া

    তবে, অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি দিক হলো, কেন এই তিন সহকারী কমিশনারকে ‘অযোগ্য’ বিবেচনা করা হলো, সেই বিষয়ে প্রজ্ঞাপনে কোনো সুনির্দিষ্ট কারণ উল্লেখ করা হয়নি। এই অস্পষ্টতা অপসারিত কর্মকর্তাদের মধ্যে গভীর বিস্ময় ও হতাশার জন্ম দিয়েছে। অপসারিত কর্মকর্তাদের একজন, কাজী আরিফুর রহমান, গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, “বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ চলাকালে গতকাল বিকেলে আমাকে প্রজ্ঞাপনটি জানানো হয়। কোনো কারণ উল্লেখ নেই। আমি কিছুই বুঝতে পারছি না।” তার এই মন্তব্য সরকারি সিদ্ধান্তের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।

    পূর্ববর্তী অভিজ্ঞতা ও আর্থিক দায়

    কাজী আরিফুর রহমানের ক্ষেত্রে এটি তাঁর প্রথম সরকারি চাকরির অভিজ্ঞতা ছিল না। তিনি পূর্বে ৪১তম বিসিএসে রেলওয়ে ক্যাডারে প্রথম স্থান অর্জন করেছিলেন এবং প্রায় দেড় বছর সরকারি চাকরিতে নিয়োজিত ছিলেন। এরপর তিনি ৪৩তম বিসিএসে প্রশাসন ক্যাডারে ২০তম হয়ে নতুন করে প্রশাসনে যোগ দেন। তাঁর মতো একজন অভিজ্ঞ ও সফল কর্মকর্তার আকস্মিক অপসারণ অনেকের কাছেই অপ্রত্যাশিত। প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে যে, যদি অপসারিত কর্মকর্তাদের কাছে সরকারের কোনো আর্থিক পাওনা থাকে, তবে পাবলিক ডিমান্ড রিকভারি অ্যাক্ট, ১৯১৩ অনুযায়ী তা আদায়যোগ্য হবে। এই পদক্ষেপ সরকারি কোষাগারের সুরক্ষা নিশ্চিত করলেও, কর্মকর্তাদের জন্য এটি একটি অতিরিক্ত চাপ হিসেবে বিবেচিত হবে।

    Recent Articles

    Related Stories

    Leave A Reply

    Please enter your comment!
    Please enter your name here