More

    ৪৪তম বিসিএস: দ্রুত নিয়োগের দাবিতে সুপারিশ পাওয়া ক্যাডারদের মানববন্ধন

    দীর্ঘ প্রায় চার বছর ধরে চলমান ৪৪তম বিসিএসের ফলাফল-সংক্রান্ত ফাইল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে দ্রুত প্রেরণের দাবিতে তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলেছেন সুপারিশপ্রাপ্ত ক্যাডাররা। আজ রবিবার বেলা ১১টার দিকে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধনে ভুক্তভোগী প্রার্থীরা তাদের এই জোরালো দাবি উপস্থাপন করেন। তাদের মূল বার্তা ছিল স্পষ্ট: ফাইল প্রেরণের জন্য আর কোনো গড়িমসি নয়, আজ বিকেলের মধ্যেই এটি সম্পন্ন করতে হবে।

    দীর্ঘসূত্রিতা ও ক্যাডারদের ক্ষোভের কারণ

    মানববন্ধনে অংশ নেওয়া সুপারিশপ্রাপ্ত ক্যাডাররা তাদের হতাশা ব্যক্ত করে বলেন যে, ৪৪তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের দিন থেকে ইতিমধ্যে ৩ বছর ১১ মাস ২৫ দিন পেরিয়ে গেছে। এত দীর্ঘ সময় পার হওয়ার পরও ১ হাজার ৬৭৬ জন যোগ্য যুবশক্তির চূড়ান্ত ফলাফলের ফাইল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে ব্যর্থ হয়েছে পিএসসি। তাদের প্রশ্ন, যদি বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন একটি বিসিএস প্রক্রিয়া সুদীর্ঘ চার বছর ধরে টেনে নিয়ে যায় এবং সুপারিশপ্রাপ্ত এই বিপুলসংখ্যক মেধাবী তরুণকে যথাযথভাবে কাজে লাগানোর নিশ্চয়তা দিতে না পারে, তাহলে এই কমিশনের প্রকৃত কাজ কী? কেন ৪৪তম বিসিএসকে অগ্রাধিকারের তালিকায় রাখা হচ্ছে না, এর একটি সুস্পষ্ট জবাব জাতির সামনে তুলে ধরার দাবিও জানানো হয়।

    ‘রিপিট ক্যাডার’ সমস্যার মূলে বিসিএসের দীর্ঘসূত্রিতা

    প্রশাসন ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত একজন প্রার্থী মানববন্ধনে বলেন, “৪৪তম বিসিএসের কার্যক্রম দ্রুত শেষ না করলে ‘রিপিট ক্যাডার’ সমস্যার সমাধান কখনোই সম্ভব হবে না। বর্তমান পরিস্থিতিতে এক বছরের মধ্যে একটি বিসিএসের কার্যক্রম শেষ করাও প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে।” তিনি আরও ব্যাখ্যা করেন যে, পরীক্ষা প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত হওয়ার কারণে অনেক যোগ্য প্রার্থী একাধিক বিসিএসে অংশগ্রহণ করেন এবং বারবার সুপারিশপ্রাপ্ত হন, যা নতুন এবং অপেক্ষমান প্রার্থীদের সুযোগকে সংকুচিত করে। এটি শুধু সরকারের মূল্যবান সময় ও অর্থের অপচয়ই নয়, বরং বহু তরুণের কর্মজীবনের পথও দীর্ঘায়িত করে তোলে।

    অদৃশ্য শক্তি ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত গড়িমসির অভিযোগ

    সুপারিশপ্রাপ্ত ক্যাডাররা আরও উল্লেখ করেন যে, দ্বিতীয় সম্পূরক ফলাফল প্রকাশের পর ইতোমধ্যে ১২ দিন এবং বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের দিন থেকে প্রায় চার বছর অতিক্রান্ত হয়েছে। এই দীর্ঘসূত্রিতার পেছনে তারা “কোনো এক অদৃশ্য শক্তির চাপ” এবং “উদ্দেশ্যপ্রণোদিত গড়িমসি”-র অভিযোগ তোলেন। তাদের মতে, পিএসসি ৪৪তম বিসিএসের রুটিন কাজগুলো করতেও অহেতুক বিলম্ব করছে। তারা পিএসসির এই নীরবতা এবং কর্মহীনতাকে জাতির প্রতি এক প্রকার প্রতারণা হিসেবেই দেখছেন। দ্রুত এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য তারা আজকের বিকেলের মধ্যেই সম্পূরক ফলাফলের ফাইল জনপ্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে প্রেরণের দাবি পুনর্ব্যক্ত করেন। এটি শুধু এই ব্যাচের প্রার্থীদের ভবিষ্যৎ জীবনের প্রশ্ন নয়, বরং দেশের সামগ্রিক প্রশাসনিক ব্যবস্থার দক্ষতা ও স্বচ্ছতার সঙ্গেও নিবিড়ভাবে জড়িত।

    Recent Articles

    Related Stories

    Leave A Reply

    Please enter your comment!
    Please enter your name here