More

    ১৩ হাজার ৫০০ সহকারী শিক্ষকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি নভেম্বরে

    দেশের প্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থায় শিক্ষক সংকট নিরসনে নতুন করে সহকারী শিক্ষক নিয়োগের একটি সুদূরপ্রসারী উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (ডিপিই) জানিয়েছে, বর্তমানে সারাদেশে ১৩,৫০০ সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে এবং এই বিপুল সংখ্যক শূন্য পদ পূরণে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট বিধিমালা হাতে পেলেই আগামী নভেম্বর মাসের মধ্যে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা সম্ভব হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে।

    সহকারী শিক্ষক নিয়োগ: বিস্তারিত পরিকল্পনা

    প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবু নূর মোহাম্মদ শামসুজ্জামান সম্প্রতি বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থাকে (বাসস) দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে এসব গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানান। রাজধানীর মিরপুরে অবস্থিত অধিদপ্তরের নিজ কার্যালয়ে গত সোমবার দেওয়া এই সাক্ষাৎকারে তিনি শিক্ষক নিয়োগ ও পদোন্নতি সংক্রান্ত বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।

    মহাপরিচালক উল্লেখ করেন, “আমরা ইতিমধ্যে প্রধান শিক্ষকদের জন্য দশম গ্রেড ঘোষণা করেছি এবং এর বাস্তবায়নে পুরোদমে কাজ চলছে। অচিরেই এই ঘোষণা কার্যকর হবে।” তিনি আরও জানান, সহকারী শিক্ষকদের জন্য ১১তম গ্রেডের সুপারিশ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে এবং পে কমিশন এটি নিয়ে আলোচনাও করেছে। শিক্ষকদের পদোন্নতি ও নতুন নিয়োগের মাধ্যমে শূন্য পদ পূরণের জন্য অধিদপ্তর ব্যাপক পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে, যা দেশের প্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

    দীর্ঘদিনের সমস্যা ও পদোন্নতির জটিলতা

    আবু নূর মোহাম্মদ শামসুজ্জামান বলেন, “এই মুহূর্তে সারাদেশে ১৩,৫০০ সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। আমরা শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত বিধিমালা হাতে পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের প্রক্রিয়ায় যাব। আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস, খুব অল্প সময়ের মধ্যেই, অর্থাৎ আগামী নভেম্বর মাসে আমরা এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে সক্ষম হব।”

    তবে, শুধুমাত্র এই ১৩,৫০০ পদ পূরণ করাই শেষ কথা নয়। মহাপরিচালক একটি দীর্ঘদিনের জটিল সমস্যার দিকে আলোকপাত করেন। তিনি জানান, বর্তমানে ৩২ হাজার সহকারী শিক্ষক “চলতি দায়িত্ব” অথবা “ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক” হিসেবে কর্মরত আছেন। এটি তাঁদের জন্য মানসিক ও পেশাগতভাবে অত্যন্ত যন্ত্রণাদায়ক পরিস্থিতি তৈরি করেছে, কারণ পদ শূন্য থাকা সত্ত্বেও একটি আইনি জটিলতার কারণে তাঁদের পদোন্নতি আটকে আছে।

    আইনি সমাধান ও দ্বিতীয় ধাপের নিয়োগ

    মহাপরিচালক আশাবাদ ব্যক্ত করেন, “আমরা আশা করছি, এই মামলার রায় খুব অল্প সময়ের মধ্যেই হয়ে যাবে।” তিনি ব্যাখ্যা করেন যে, আইনি জটিলতা নিরসন হলে এই ৩২ হাজার ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের পদ স্থায়ীভাবে পূরণ করা সম্ভব হবে। এর ফলস্বরূপ, এই পদগুলো পূরণ হওয়ার সাথে সাথে ৩২ হাজার সহকারী শিক্ষকের পদও শূন্য হয়ে যাবে। সেই শূন্য পদগুলোতে দ্বিতীয় ধাপে আবারও নতুন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া সম্ভব হবে, যা দেশের প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থায় এক নতুন গতি আনবে। এই সামগ্রিক প্রক্রিয়া প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে অধিদপ্তর মনে করে এবং শিক্ষার্থীদের জন্য একটি উন্নত শিক্ষণ পরিবেশ নিশ্চিত করবে।

    Recent Articles

    Related Stories

    Leave A Reply

    Please enter your comment!
    Please enter your name here