জনপ্রিয় অভিনেত্রী প্রিয়ন্তী উর্বী বর্তমানে দেশের বিনোদন জগতে এক পরিচিত মুখ। তাঁর স্বকীয় অভিনয়শৈলী এবং বৈচিত্র্যময় চরিত্রের মধ্য দিয়ে তিনি দর্শকের হৃদয়ে নিজেদের স্থান করে নিয়েছেন। সম্প্রতি, মুক্তি পেতে যাওয়া এবং ইতিপূর্বে প্রচারিত তাঁর কয়েকটি উল্লেখযোগ্য কাজ নিয়ে প্রিয়ন্তী উর্বী কথা বলেছেন, যেখানে উঠে এসেছে নাটকের গল্প, চরিত্রের গভীরতা এবং অভিনয়ের পেছনের বিভিন্ন অভিজ্ঞতার কথা। তাঁর এই আলাপচারিতা একদিকে যেমন তাঁর কাজের প্রতি গভীর নিষ্ঠা প্রকাশ করে, তেমনি দর্শকদেরও তাঁর নতুন কাজগুলো সম্পর্কে আগ্রহী করে তোলে।
‘এমন দিনে তারে বলা যায়’: এক অনবদ্য গল্পের হাতছানি
অভিনেত্রী প্রিয়ন্তী উর্বী ‘এমন দিনে তারে বলা যায়’ নাটকটির পাণ্ডুলিপি পাওয়ার পর এক অসাধারণ অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হন। একটি দীর্ঘ শুটিং শেষে রাত দেড়টায় তিনি যখন বাসায় ফেরেন, তখন ভেবেছিলেন মাত্র দু’টি পৃষ্ঠা পড়েই ঘুমাতে যাবেন। কিন্তু গল্পের নিগূঢ় আকর্ষণ এতটাই তীব্র ছিল যে, কখন যে ৩০ পৃষ্ঠার সম্পূর্ণ পাণ্ডুলিপিটি শেষ করেছেন, তা টেরই পাননি। ঘড়ির কাঁটা তখন রাত সাড়ে চারটা ছুঁই ছুঁই। গল্পটি শেষ করার পর তাঁর সারা শরীরে এক অব্যক্ত শিহরণ জাগে, যা তিনি ‘গুজবাম্পস’ বা লোমকূপ খাড়া হয়ে ওঠার অনুভূতি হিসেবে বর্ণনা করেন। এই তীব্র আবেগ থেকেই তিনি তৎক্ষণাৎ নির্মাতা প্রীতম ভাইকে বার্তা পাঠিয়ে জানতে চান, ‘আপনি এটা কী গল্প লিখেছেন? এত সুন্দর গল্প যে, আমি সারা রাত ঘুমাতে পারিনি।’ এই ঘটনা থেকেই বোঝা যায় গল্পের গভীরতা ও আবেদন কতখানি। উর্বী আরও উল্লেখ করেন যে, নাটকটির প্রোমো, টিজার বা ট্রেলার দেখে গল্পের মূল বিষয়বস্তু অনুমান করা প্রায় অসম্ভব, যা এর রহস্যময়তাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। গল্পটিকে তিনি ‘অদ্ভুত’ এবং ব্যতিক্রমী হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন, যা দর্শকদের নতুন কিছু উপহার দেবে বলে তাঁর বিশ্বাস।
প্রিয়ন্তী উর্বীর চরিত্র: বুদ্ধিদীপ্ত মনোবিজ্ঞানী
‘এমন দিনে তারে বলা যায়’ নাটকে প্রিয়ন্তী উর্বী একটি অত্যন্ত আকর্ষণীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন, যা একজন মনোবিজ্ঞানীকে ঘিরে আবর্তিত। তাঁর চরিত্রের জীবনের দুটি ভিন্ন সময়কাল নাটকে চিত্রিত হবে। উর্বী তাঁর চরিত্রটিকে বর্ণনা করেছেন একজন অত্যন্ত বুদ্ধিমতী এবং আত্মবিশ্বাসী নারী হিসেবে, যিনি নিজের সিদ্ধান্ত গ্রহণে অটল। তিনি মনে করেন, তাঁর চরিত্রটি নিজেকে যথেষ্ট গুরুত্ব দেয় এবং নিজের বিশ্বাস ও যুক্তির ওপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত নেয়, বাইরের কোনো প্রভাবে প্রভাবিত না হয়ে। এই স্বতন্ত্র ও দৃঢ়চেতা চরিত্রটি প্রিয়ন্তী উর্বীর অভিনয় ক্যারিয়ারে এক নতুন মাত্রা যোগ করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
‘ভাবিয়া করিও কাজ’: তারুণ্যের ভুল ও এক সফল জুটি
‘ভাবিয়া করিও কাজ’ নাটকে প্রিয়ন্তী উর্বী অভিনেতা আরশ খান-এর বিপরীতে কাজ করেছেন, যার পরিচালনা করেছেন রাইসুল তমাল। এই নাটকে তিনি একজন কলেজ শিক্ষার্থীর ভূমিকায় অভিনয় করেছেন, যার জীবনে ঘটে যাওয়া একটি ভুলকে কেন্দ্র করে গল্পটি আবর্তিত হয়েছে। প্রিয়ন্তী বিশেষভাবে উল্লেখ করেছেন যে, রাইসুল তমাল পরিচালিত নাটকে আরশ খানের সাথে তাঁর জুটি দর্শকদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং সফল। এর প্রমাণ হিসেবে তিনি তাঁদের পূর্ববর্তী নাটক ‘পাখি গো নাম ধরে ডাকো’-এর কথা তুলে ধরেন, যা মাত্র এক মাসে ১১ মিলিয়ন ভিউ অতিক্রম করে এক অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করেছিল। এই সাফল্য তাদের জুটি এবং পরিচালক-অভিনেতার বোঝাপড়ার গভীরতা প্রমাণ করে, যা ‘ভাবিয়া করিও কাজ’ নাটকের প্রতি দর্শকদের প্রত্যাশাকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
‘তাহার মায়া’: সংকট মোকাবিলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবন
অন্যদিকে, ‘তাহার মায়া’ শিরোনামের নাটকটির গল্পকেও প্রিয়ন্তী অত্যন্ত হৃদয়গ্রাহী বলে বর্ণনা করেছেন। এই নাটকে তাঁর সহ-অভিনেতা হিসেবে রয়েছেন পার্থ শেখ, এবং এটি পরিচালনা করেছেন প্রত্যয় (আরমান রহমান)। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জীবনকে কেন্দ্র করে এর গল্প আবর্তিত হয়েছে। প্রিয়ন্তী এখানে একজন শিক্ষার্থীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন, যিনি তাঁর শিক্ষাজীবনে ও ব্যক্তিগত জীবনে বিভিন্ন ধরনের সংকট ও প্রতিকূলতার সম্মুখীন হন। গল্পের মূল আকর্ষণ হলো, এই ক্রান্তিকালে পার্থ শেখ অভিনীত চরিত্রটি কীভাবে তাঁকে নিরন্তর সাহায্য ও সমর্থন জুগিয়ে যায়। এই মানবিক গল্পটি দর্শকদের বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবনের বিভিন্ন দিক এবং সম্পর্কের গুরুত্ব অনুধাবনে সাহায্য করবে বলে উর্বী বিশ্বাস করেন।
