More

    ৫০তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই

    দেশের সরকারি চাকরিপ্রার্থীদের বহু প্রতীক্ষিত ৫০তম বিসিএস পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি আগামী নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে প্রকাশ হতে চলেছে। বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) ইতোমধ্যে এই বিষয়ে জোর প্রস্তুতি শুরু করেছে, যা দেশের সর্বোচ্চ সম্মানজনক সরকারি নিয়োগ প্রক্রিয়া হিসেবে বিবেচিত। যদিও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে পদসংক্রান্ত চূড়ান্ত চাহিদাপত্র এখনো পিএসসিতে এসে পৌঁছায়নি, তবে কমিশনের অভ্যন্তরীণ সূত্র এই সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে যে, এই বিশেষ বিসিএসের মাধ্যমে বিভিন্ন ক্যাডারে প্রায় এক হাজার ছয়শ’ থেকে এক হাজার সাতশ’ কর্মকর্তা নিয়োগ লাভ করতে পারেন।

    বর্তমান কমিশন দায়িত্বভার গ্রহণের পর থেকেই একটি সুদূরপ্রসারী রোডম্যাপ তৈরি করেছে। এই রোডম্যাপের মূল লক্ষ্য হলো প্রতি বছর নভেম্বর মাসে নতুন বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা এবং পরবর্তী বছরের ৩০ অক্টোবরের মধ্যে সেই বিসিএসের চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করা। ৫০তম বিসিএস এই লক্ষ্য পূরণে কমিশনের দৃঢ় প্রতিজ্ঞার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ এবং এই রোডম্যাপ অনুযায়ীই নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের জোর পরিকল্পনা রয়েছে। এটি বিসিএস পরীক্ষার দীর্ঘসূত্রিতা কমিয়ে একটি সময়াবদ্ধ ও কার্যকর প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে কমিশনের অঙ্গীকারের প্রতিফলন।

    এ বিষয়ে সরকারি কর্ম কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোবাশ্বের মোনেম প্রথম আলোকে জানান যে, ৫০তম বিসিএসের জন্য চাহিদাপত্র প্রেরণের বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে পত্র পাঠানো হয়েছে। মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদিত পদসংখ্যা পাওয়ার পরই দ্রুত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে। তিনি আরও দৃঢ়তার সাথে উল্লেখ করেন, “আমাদের ঘোষিত রোডম্যাপ অনুযায়ী নভেম্বরেই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হবে এবং আগামী বছরের ৩০ অক্টোবরের মধ্যে ফলাফল প্রকাশের লক্ষ্যে আমরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি।” এই বক্তব্যে কমিশনের কর্মতৎপরতা ও নির্ধারিত সময়সীমার প্রতি তাদের অঙ্গীকার স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

    ৫০তম বিসিএস: একটি নতুন দিগন্ত এবং কার্যক্ষমতার মানদণ্ড

    পিএসসি’র অভ্যন্তরীন সূত্রগুলো ৫০তম বিসিএসকে কেবল একটি নিয়মিত পরীক্ষা হিসেবে দেখছে না, বরং এটি তাদের কার্যক্ষমতা ও সময়বদ্ধতা যাচাইয়ের একটি বিশাল সুযোগ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এই মাইলফলক বিসিএসকে কমিশন একটি নতুন দিগন্তের সূচনালগ্ন মনে করছে, যেখানে তাদের প্রশাসনিক দক্ষতা ও ব্যবস্থাপনা সক্ষমতা জনসম্মুখে প্রতিফলিত হবে। এই পরীক্ষার আবেদন প্রক্রিয়া, প্রিলিমিনারি, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা—সকল ধাপই সুনির্দিষ্ট সময়সূচী অনুযায়ী সম্পন্ন করার জন্য ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হচ্ছে। এটি পিএসসি’র জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হলেও, একই সাথে এটি তাদের সক্ষমতা প্রদর্শনের একটি অনন্য সুযোগও বটে।

    কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, প্রিলিমিনারি পরীক্ষার সিলেবাস ও সামগ্রিক কাঠামোতে তেমন কোনো মৌলিক পরিবর্তন আসছে না, যা পরীক্ষার্থীদের জন্য একটি ইতিবাচক দিক। তবে, পরীক্ষার ব্যবস্থাপনায় কিছু উল্লেখযোগ্য প্রযুক্তিগত পরিবর্তন আনা হতে পারে। এই পরিবর্তনগুলো পুরো প্রক্রিয়াটিকে আরও স্বচ্ছ, দ্রুত এবং ত্রুটিমুক্ত করবে বলে আশা করা হচ্ছে। পিএসসি’র সদস্যরা বিশ্বাস করেন যে, ৫০তম বিসিএস একটি ‘প্রযুক্তি-বান্ধব ও যুগোপযোগী’ পরীক্ষা হবে, যা দেশের সরকারি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় একটি নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে এবং ভবিষ্যতের বিসিএস পরীক্ষাগুলোর জন্য একটি মডেল হিসেবে কাজ করবে। এর মাধ্যমে প্রার্থীরা একটি আধুনিক ও কার্যকরী পরীক্ষা পদ্ধতির অভিজ্ঞতা লাভ করতে পারবেন।

    Recent Articles

    Related Stories

    Leave A Reply

    Please enter your comment!
    Please enter your name here