ব্যাংকিং খাতে কর্মজীবনের স্বপ্ন দেখা হাজারো প্রার্থীর অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটি সচিবালয় (বিএসসিএস) কর্তৃক এক গুরুত্বপূর্ণ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক সম্প্রতি তাদের সদস্যভুক্ত ৯টি ব্যাংক ও ২টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ‘সিনিয়র অফিসার (সাধারণ)’ পদে নিয়োগের লক্ষ্যে অনুষ্ঠিতব্য প্রিলিমিনারি (এমসিকিউ) এবং লিখিত পরীক্ষার বিস্তারিত সময়সূচি ঘোষণা করেছে। এই ঘোষণা সেসব প্রার্থীর জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ, যারা দীর্ঘ দিন ধরে এই পদের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন এবং নিজেদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করার স্বপ্ন দেখছেন। সুনির্দিষ্ট তারিখ ও নির্দেশনা সম্বলিত এই বিজ্ঞপ্তি পরীক্ষার্থীদের প্রস্তুতিকে আরও সুসংগঠিত করতে সাহায্য করবে।
পরীক্ষার সময়সূচি ও বিস্তারিত তথ্য
এই নিয়োগ প্রক্রিয়াটি বাংলাদেশের অন্যতম প্রতিযোগিতামূলক একটি ক্ষেত্র, যেখানে মেধা ও কঠোর পরিশ্রমের যথাযথ মূল্যায়ন করা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখিত পদের নাম, পরীক্ষার ধরণ ও নম্বর বন্টন নিচে বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হলো:
- পদের নাম: সিনিয়র অফিসার (সাধারণ) (৯ম গ্রেড)
প্রিলিমিনারি পরীক্ষা (এমসিকিউ)
প্রাথমিক যাচাই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে এই এমসিকিউ পরীক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এতে উত্তীর্ণ প্রার্থীরাই কেবল লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ পাবেন।
- তারিখ ও সময়: ৫ ডিসেম্বর ২০২৫, সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত।
- মোট নম্বর: ১০০ নম্বর। এই ১ ঘণ্টার পরীক্ষাটি দ্রুত ও নির্ভুলভাবে উত্তর দেওয়ার সক্ষমতাকে যাচাই করবে।
লিখিত পরীক্ষা
প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় সফলভাবে উত্তীর্ণদের জন্য এই লিখিত পরীক্ষা মেধাচয়নের চূড়ান্ত ধাপগুলোর একটি। এখানে প্রার্থীর বিশ্লেষণাত্মক ক্ষমতা, বিষয়ভিত্তিক জ্ঞান ও লেখার দক্ষতা যাচাই করা হবে।
- তারিখ ও সময়: ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত।
- মোট নম্বর: ২০০ নম্বর। দুই ঘণ্টার এই পরীক্ষায় প্রার্থীর গভীর জ্ঞান এবং তথ্য উপস্থাপনের দক্ষতা পরিমাপ করা হবে।
পরীক্ষার্থীদের জন্য অত্যাবশ্যকীয় নির্দেশনা
পরীক্ষাকেন্দ্রের শৃঙ্খলা বজায় রাখা এবং পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক কিছু কঠোর নির্দেশনা জারি করেছে। প্রতিটি পরীক্ষার্থীর জন্য এই নিয়মাবলী পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে অনুসরণ করা বাধ্যতামূলক।
- এমসিকিউ পরীক্ষায় নম্বর বিভাজন: প্রতিটি সঠিক উত্তরের জন্য ১ নম্বর প্রদান করা হবে। তবে, প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য শূন্য দশমিক ২৫ (০.২৫) নম্বর কাটা যাবে। এই নেগেটিভ মার্কিং পদ্ধতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, তাই পরীক্ষার্থীদের শুধুমাত্র নিশ্চিত উত্তরগুলোই প্রদান করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
- পরীক্ষাকেন্দ্রে উপস্থিতির সময়: পরীক্ষার্থীদেরকে অবশ্যই পরীক্ষার নির্ধারিত সময়ের কমপক্ষে এক ঘণ্টা আগে কেন্দ্রে উপস্থিত থাকতে হবে। গেট বন্ধ হওয়ার পর কোনো প্রার্থীকে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না, তাই সময়ানুবর্তিতা এখানে অপরিহার্য।
- নিষিদ্ধ সামগ্রী: পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রবেশপত্র ব্যতীত কোনো ধরনের কাগজ, বই, মুঠোফোন (মোবাইল ফোন), মানিব্যাগ, ক্যালকুলেটর, ডিজিটাল বা স্মার্ট ঘড়ি অথবা অন্য কোনো প্রকার ইলেকট্রনিক ডিভাইস আনা সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ। এই নিয়ম ভঙ্গ করলে পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা বাতিলসহ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হতে পারে।
- উভয় কান দৃশ্যমান রাখা: পরীক্ষার সময় পরীক্ষার্থীদেরকে উভয় কান অবশ্যই দৃশ্যমান রাখতে হবে। এটি কোনো প্রকার অসাধু উপায় অবলম্বন (যেমন: ক্ষুদ্র ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার) প্রতিরোধে একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা।
পরীক্ষাকেন্দ্রের নাম ও আসনবিন্যাস এবং শূন্য পদসমূহ
এই পরীক্ষার জন্য পরীক্ষাকেন্দ্রের সুনির্দিষ্ট নাম ও প্রতিটি প্রার্থীর আসনবিন্যাস বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়োগসংক্রান্ত নিজস্ব ওয়েবসাইটে (erecruitment.bb.org.bd) প্রকাশ করা হবে। পরীক্ষার্থীদের নিয়মিতভাবে এই ওয়েবসাইটটি পর্যবেক্ষণ করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে, যাতে তারা সময়মতো নিজেদের কেন্দ্র এবং আসন সম্পর্কে অবহিত হতে পারেন। প্রবেশপত্র ডাউনলোডের ক্ষেত্রেও একই ওয়েবসাইট ব্যবহৃত হবে।
উল্লেখ্য, মোট ১ হাজার ৫৫৪টি শূন্য পদে নিয়োগের লক্ষ্যে এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এত বিপুল সংখ্যক পদের বিপরীতে প্রার্থীর সংখ্যা অনেক বেশি হওয়ায় প্রতিযোগিতা নিঃসন্দেহে তীব্র হবে। তাই, প্রতিটি প্রার্থীকে তাদের সেরা প্রস্তুতি নিয়ে এই পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে। যথাযথ অধ্যবসায় এবং প্রস্তুতির মাধ্যমে একজন প্রার্থী তার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে সক্ষম হবেন বলে আশা করা যায়। সকল পরীক্ষার্থীর জন্য রইল শুভকামনা!
