More

    মিথিলার জীবন বদলে দিল থাইল্যান্ডের ১৯টি দিন

    সম্প্রতি শেষ হলো মর্যাদাপূর্ণ ‘মিস ইউনিভার্স’ প্রতিযোগিতার এবারের আসর, যেখানে বিশ্ব মঞ্চে নিজেদের সৌন্দর্য, মেধা ও ব্যক্তিত্বের দ্যুতি ছড়িয়েছিলেন বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা। প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত ফলাফলে বিজয়ের মুকুট ছিনিয়ে নিয়েছেন মিস মেক্সিকো ফাতিমা বশ। তবে এই আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্বকারী তানজিয়া জামান মিথিলা মুকুট জয় করতে না পারলেও, তার আত্মবিশ্বাস বা ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা বিন্দুমাত্র টাল খায়নি। বরং তিনি এরই মধ্যে নিজের আগামী দিনের পথরেখা অঙ্কন করে ফেলেছেন। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, এখন তিনি পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে অভিনয় জগতে প্রবেশ করতে চান।

    ক্লান্তির অবসানে অতঃপর নতুন যাত্রা

    প্রতিযোগিতা শেষে মিথিলার সাথে যোগাযোগ করা বেশ কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছিল। শনিবার সকাল থেকেই তাকে মেসেঞ্জার বা হোয়াটসঅ্যাপে পাওয়া যাচ্ছিল না। অবশেষে রোববার সন্ধ্যায় ফোন ধরে তিনি জানালেন তার দীর্ঘদিনের ক্লান্তি অবসানের কথা। মিথিলা বলেন, “গত দুদিন ধরে আমি একটানা ১৬ ঘণ্টা করে ঘুমিয়েছি। দীর্ঘ ১৯ দিন ধরে প্রতিদিন মাত্র তিন ঘণ্টা ঘুমিয়ে এই কঠিন প্রতিযোগিতার ইভেন্টগুলোতে অংশ নিতে হয়েছে। সারাদিনের নানা আয়োজনের শেষে যখন রুমে ফিরতাম, মেকআপ তুলে ঘুমাতে যেতেই দুটো বেজে যেত। আর ভোর পাঁচটায় উঠে তৈরি হয়ে সাতটার মধ্যে লবিতে নেমে যেতে হতো। সারা দিন একের পর এক ইভেন্ট! তাই এই দুদিন আমি শুধু ঘুমিয়েই কাটিয়েছি।” এই উক্তি তার শারীরিক ও মানসিক ধৈর্যের এক বাস্তব চিত্র তুলে ধরে, যা আন্তর্জাতিক মানের প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার জন্য অপরিহার্য।

    থাইল্যান্ড থেকে ফেরা এবং ভবিষ্যতের দৃঢ় সিদ্ধান্ত

    মিথিলা জানান, তিনি সোমবার থাইল্যান্ড থেকে দেশে ফিরছেন। দেশে ফেরার আগে তিনি তার ভবিষ্যতের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তটি ঘোষণা করেছেন। তার ভাষ্যমতে, “আমি এখন সিনেমায় অভিনয় নিয়ে গভীরভাবে ভাবছি। এটি নিয়ে আমি সিরিয়াসলি সিদ্ধান্ত নিয়েছি এবং নিয়মিত অভিনয়ে যুক্ত হওয়ার ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছেছি।” মডেলিং এবং অভিনয় জগতে মিথিলা এর আগে একটি মাত্র চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন—‘রোহিঙ্গা’, যার পরিচালক ছিলেন হায়দার খান। তিনি আরও জানান, দেশে সিনেমার জন্য বেশ কিছু প্রস্তাব তিনি ইতিপূর্বেই পেয়েছেন। তবে, তার লক্ষ্য কেবল অভিনয়ে যুক্ত হওয়া নয়, বরং একটি মানসম্মত কাজের মাধ্যমে নিজের অভিষেক ঘটানো। তিনি বলেন, “ভুলভাল কোনো প্রজেক্টে যুক্ত হতে চাই না। ভালো একটি গল্প দিয়ে দেশের সিনেমায় আমার অভিষেক হোক—এটাই আমার একান্ত চাওয়া।

    দর্শকের ভালোবাসা – শ্রেষ্ঠ অর্জন

    মিস ইউনিভার্সের মুকুট জয় করতে না পারলেও তানজিয়া জামান মিথিলা দর্শকের অকুণ্ঠ ভালোবাসাকেই নিজের সবচেয়ে বড় অর্জন হিসেবে দেখছেন। তিনি গর্বের সাথে বলেন, “আমি পিপলস চয়েজে খুব ভালো করেছি—এটা সবাই জানেন। আমি সেরা ৩০-এর মধ্যে জায়গা করে নিতে পেরেছি। এমনকি ক্লোজডোর ইন্টারভিউতেও দারুণ পারফর্ম করেছি।” তার এই মন্তব্য প্রমাণ করে, জয় বা পরাজয়ের ঊর্ধ্বে গিয়ে তিনি মানুষের মন জয় করাকেই বেশি গুরুত্ব দেন। বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করে তিনি যে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন এবং যে ভালোবাসা কুড়িয়েছেন, তা নিঃসন্দেহে তার অভিনয় জীবনের নতুন পথে পা রাখার জন্য একটি মাইলফলক হিসেবে কাজ করবে। মিথিলার এই আত্মপ্রত্যয়ী যাত্রা দেশের বিনোদন জগতে নতুন এক দিগন্ত উন্মোচন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

    Recent Articles

    Related Stories

    Leave A Reply

    Please enter your comment!
    Please enter your name here