বৈশ্বিক স্বর্ণের বাজারে চলমান ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার সরাসরি প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশের স্থানীয় বাজারে। এর ফলস্বরূপ, দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো প্রতি ভরি ২২ ক্যারেট সোনার দাম ২ লাখ ১ হাজার টাকা ছাড়িয়ে এক নতুন মাইলফলক স্থাপন করেছে। বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস) গত ১ নভেম্বর, শনিবার রাতে স্বর্ণের এই নতুন মূল্য ঘোষণা করেছে, যা ২ নভেম্বর, রবিবার থেকে কার্যকর হয়েছে এবং পরবর্তী নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত এই মূল্যেই স্বর্ণ কেনাবেচা হবে, এমনকি ৯ নভেম্বর, রবিবারও এই দামে স্বর্ণ বিক্রি হবে।
সোনার দাম বৃদ্ধির কারণ এবং বিস্তারিত
বাজুস থেকে প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে যে, আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি এবং এই মূল্যবৃদ্ধি বিবেচনা করেই নতুন দাম নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এটি ক্রেতাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করছে, কারণ এটি সোনার গহনা এবং বিনিয়োগের ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিক প্রভাব ফেলবে।
নতুন ঘোষণা অনুযায়ী, বিভিন্ন ক্যারেটের স্বর্ণের দাম নিম্নরূপ নির্ধারণ করা হয়েছে, যেখানে প্রতিটি ক্ষেত্রেই পূর্বের মূল্যের তুলনায় উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি লক্ষ্য করা গেছে:
- ২২ ক্যারেট স্বর্ণ: প্রতি ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) ২ লাখ ১ হাজার ৭৭৬ টাকা। উল্লেখ্য, ১ নভেম্বর এর পূর্ব মূল্য ছিল ২ লাখ ০ হাজার ৯৬ টাকা।
- ২১ ক্যারেট স্বর্ণ: প্রতি ভরি ১ লাখ ৯২ হাজার ৫৯৬ টাকা। পূর্বের মূল্য ছিল ১ লাখ ৯০ হাজার ৯৯৮ টাকা।
- ১৮ ক্যারেট স্বর্ণ: প্রতি ভরি ১ লাখ ৬৫ হাজার ৮১ টাকা। যা পূর্বে ১ লাখ ৬৩ হাজার ৭১৬ টাকা ছিল।
- সনাতন পদ্ধতির স্বর্ণ: প্রতি ভরি ১ লাখ ৩৭ হাজার ১৮০ টাকা। পূর্বে এই দাম ছিল ১ লাখ ৩৬ হাজার ১৪ টাকা।
ভ্যাট ও মজুরির সংযুক্তি
বাজুস আরও জানিয়েছে যে, ক্রেতাদের স্বর্ণের বিক্রয়মূল্যের সঙ্গে আবশ্যিকভাবে সরকার-নির্ধারিত ৫ শতাংশ ভ্যাট পরিশোধ করতে হবে। এর পাশাপাশি, গহনা তৈরির জন্য বাজুস-নির্ধারিত ন্যূনতম ৬ শতাংশ মজুরি যুক্ত হবে। তবে, গহনার নকশা, কারুকার্য এবং মানের ভিন্নতার কারণে মজুরির হারে তারতম্য ঘটতে পারে, যা ক্রেতাদের ক্রয় করার সময় বিবেচনায় রাখা জরুরি। এই নতুন মূল্য কাঠামো বাংলাদেশের স্বর্ণের বাজারে এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে এবং ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়কেই এর সাথে মানিয়ে চলতে হবে।
