More

    আজকের বিনিময় হার

    দেশের মুদ্রাবাজারে আজ, সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবস সোমবার, একটি উল্লেখযোগ্য প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে। ডলারের মূল্যমান বৃদ্ধি পাওয়ায় বাজারের গতিপ্রকৃতি আবারও আলোচনায় উঠে এসেছে। গত সপ্তাহে টানা কয়েকদিন দরপতনের পর শেষ কার্যদিবসে ডলারের দামে যে সামান্য ঊর্ধ্বগতি দেখা গিয়েছিল, আজ সেই ধারা আরও জোরদার হয়েছে। এই ধারাবাহিক মূল্য বৃদ্ধি দেশের সামগ্রিক অর্থনীতি এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ওপর তাৎপর্যপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে, যা অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছে।

    ডলারের দামের ঊর্ধ্বগতি: কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য

    বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, আজকের লেনদেনে ডলারের বিনিময় হারে স্পষ্ট বৃদ্ধি পরিলক্ষিত হয়েছে। দিনের সর্বোচ্চ পর্যায়ে ১২২ দশমিক ১৯ টাকা এবং সর্বনিম্ন পর্যায়ে ১২২ দশমিক ১০ টাকা দরে ডলার লেনদেন হয়েছে। দিনের গড় বিনিময় হার দাঁড়িয়েছে ১২২ দশমিক ১৩ টাকা। এই পরিসংখ্যানগুলো অর্থনীতির সূক্ষ্ম পরিবর্তন এবং বৈদেশিক মুদ্রার ওপর চাপ নির্দেশ করে। উল্লেখ্য, গত জুলাই মাস থেকে চলতি নভেম্বর মাস পর্যন্ত ডলারের বিনিময় হার ধারাবাহিকভাবে ওঠানামার মধ্য দিয়ে চলেছে, যা বাজারের অস্থিরতা এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রভাবকের দিকে ইঙ্গিত করে।

    অন্যান্য মুদ্রার চালচিত্র ও বাজার প্রবণতা

    শুধু ডলার নয়, আজকের মুদ্রাবাজারে অন্যান্য প্রধান বৈদেশিক মুদ্রার ক্ষেত্রেও একই ধরনের চিত্র দেখা গেছে। এই তালিকায় রয়েছে ইউরো, ব্রিটিশ পাউন্ড, চীনা ইউয়ান, অস্ট্রেলীয় ডলার এবং সিঙ্গাপুরি ডলার—এসব মুদ্রার মূল্যমানেও বৃদ্ধি ঘটেছে। বিশ্ব অর্থনীতির বিভিন্ন প্রভাবক এবং স্থানীয় চাহিদা-যোগানের তারতম্য এর পেছনে কাজ করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে, ভারতীয় রুপি এবং জাপানি ইয়েনের মূল্যমানে আজ কোনো পরিবর্তন আসেনি, যা তাদের আপেক্ষিক স্থিতিশীল অবস্থানকে নির্দেশ করে।

    খোলাবাজার ও অর্থনৈতিক প্রভাব

    কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্তৃক নির্ধারিত দরের চেয়ে খোলাবাজারে বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার সাধারণত কিছুটা বেশি থাকে, যা আজও পরিলক্ষিত হয়েছে। এই তারতম্য আমদানিকারক, রপ্তানিকারক এবং প্রবাসীদের রেমিট্যান্স প্রেরণের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হারের এই ওঠানামা সরাসরি দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য এবং সামগ্রিক অর্থনীতিকে প্রভাবিত করে। ডলারসহ অন্যান্য মুদ্রার মূল্য বৃদ্ধি পেলে আমদানি ব্যয় বাড়ে, যা দেশের অভ্যন্তরে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামের ওপর প্রভাব ফেলে এবং মূল্যস্ফীতির চাপ বাড়ায়। অন্যদিকে, রপ্তানিকারকরা কিছু সুবিধা পেলেও, দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের স্থিতিশীলতা এবং অর্থনৈতিক ভারসাম্য বজায় রাখা একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। এই জটিল সমীকরণগুলো নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা এবং যথাযথ নীতিগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য অপরিহার্য।

    Recent Articles

    Related Stories

    Leave A Reply

    Please enter your comment!
    Please enter your name here