More

    ২০০ কোটি রুপি! শাহরুখ নাকি অমিতাভ, সবচেয়ে দামি বাড়ি কার

    বলিউড তারকাদের জীবনযাপন সবসময়ই সাধারণ মানুষের কৌতূহল জাগায়। তাদের বিলাসবহুল জীবনযাত্রার অন্যতম প্রতিচ্ছবি হলো তাদের বাসস্থান। মুম্বাইয়ের ঝলমলে আকাশচুম্বী অট্টালিকা থেকে শুরু করে সমুদ্রের তীরে অবস্থিত পেন্টহাউস পর্যন্ত, প্রতিটি তারকার বাড়িই যেন তাদের ব্যক্তিত্ব ও রুচির এক অনন্য দৃষ্টান্ত। সুচারু নকশা, আধুনিক স্থাপত্য এবং অগণিত সুযোগ-সুবিধা নিয়ে গড়ে ওঠা এই আবাসস্থলগুলো কেবল ইটের দেওয়াল নয়, বরং স্বপ্ন ও সাফল্যের এক প্রতিরূপ। আজ আমরা বলিউডের এমনই কিছু জনপ্রিয় জুটির চোখ ধাঁধানো বাসস্থানের অন্দরমহলে উঁকি দেব, যেখানে শিল্প, সৌন্দর্য আর আভিজাত্য একে অপরের পরিপূরক।

    রণবীর কাপুর ও আলিয়া ভাটের ‘বাস্তু’ – আভিজাত্য ও পরিমিতিবোধের মিশেল

    বলিউডের পাওয়ার কাপল রণবীর কাপুর ও আলিয়া ভাটের পালি হিলে অবস্থিত ‘বাস্তু’ নামক এই দৃষ্টিনন্দন আবাসনটি তাদের রুচিশীল ব্যক্তিত্বের এক উজ্জ্বল প্রতিচ্ছবি। কিংবদন্তি ইন্টেরিয়র ডিজাইনার গৌরী খানের শৈল্পিক ছোঁয়ায় এই বাড়িটি পেয়েছে এক অনন্য মাত্রা। এর নকশায় রয়েছে নিরলংকার অথচ আধুনিকতার এক অপূর্ব সমন্বয়, যা এই দম্পতির পরিমিত রুচি এবং আভিজাত্যের সুস্পষ্ট ইঙ্গিত দেয়। ৩৫ কোটি রুপি মূল্যের এই বিলাসবহুল বাড়িটি কেবল একটি বাসস্থান নয়, বরং শিল্প ও সৌন্দর্যের এক অনবদ্য নিবেদন।

    তবে, তাদের স্বপ্নের পরিধি এখানেই শেষ নয়। বান্দ্রায় এই তারকা দম্পতির আরও একটি বিশালাকার বাড়ি নির্মাণাধীন রয়েছে, যার সম্ভাব্য মূল্য প্রায় ২৫০ কোটি রুপি। কাজ শেষ হলে এটি নিঃসন্দেহে বলিউডের তারকাদের মালিকানাধীন অন্যতম ব্যয়বহুল এবং সুবৃহৎ আবাসন হিসেবে পরিচিতি লাভ করবে, যা মুম্বাইয়ের রিয়েল এস্টেট বাজারে এক নতুন মানদণ্ড স্থাপন করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

    শহীদ কাপুর ও মীরা রাজপুতের ওর্লির ডুপ্লেক্স – পারিবারিক উষ্ণতা ও সমুদ্রের হাতছানি

    মুম্বাইয়ের ওর্লিতে অবস্থিত শহীদ কাপুর ও মীরা রাজপুতের সদ্য সংস্কারকৃত ডুপ্লেক্স আবাসনটি তার অতুলনীয় সমুদ্রসেতু দৃশ্যের জন্য বিশেষভাবে পরিচিত। এই বিলাসী বাসস্থানটির মূল্য প্রায় ৫৬ কোটি রুপি। আধুনিক সাজসজ্জা এবং প্রশস্ত স্থানের সমন্বয়ে গড়া এই বাড়িটি তারকা দম্পতির ব্যক্তিগত পছন্দের প্রতিফলন। শহীদ কাপুর প্রায়শই তার ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে এই বাড়ির মনোরম দৃশ্য এবং অন্দরমহলের ছবি পোস্ট করে থাকেন, যা তার ভক্তদের কাছে ব্যাপক সাড়া ফেলে।

    এই বাড়িটির প্রতি মীরা রাজপুতের বিশেষ অনুভূতির কথা তিনি নিজেই ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেন, “আমাদের বাগ্‌দানের ছয় মাস পর বিয়ে হয়, আর বিয়ের ছয় মাসের মধ্যেই আমি জানতে পারি যে আমি অন্তঃসত্ত্বা। প্রথম সন্তানের আগমনের জন্য আমরা জুহুর ফ্ল্যাটে কিছু পরিবর্তন এনেছিলাম। কিন্তু যখন দ্বিতীয়বার অন্তঃসত্ত্বা হলাম, তখন মনে হলো আমাদের পরিবারের জন্য একটি নতুন, প্রশস্ত ও উপযুক্ত জায়গার প্রয়োজন।” মীরা ও শহীদ মূলত সি-লিংকের পাশের অঞ্চলেই বসবাস করতে চেয়েছিলেন, যেখানে তারা সমুদ্রের স্নিগ্ধতা উপভোগ করতে পারবেন। ওর্লির এই ডুপ্লেক্স ফ্ল্যাটটি দেখার পর তাদের মনে হয়েছিল, ‘এটাই আমাদের বাড়ি’ – এই অনুভূতিই যেন এই বিলাসবহুল আবাসনটিকে তাদের কাছে আরও বেশি মূল্যবান করে তুলেছে। এটি কেবল একটি ঠিকানা নয়, বরং ক্রমবর্ধমান পরিবারের জন্য ভালোবাসা ও আশ্রয়ের এক উষ্ণ নিবেদন।

    জন আব্রাহামের ‘ভিলা ইন দ্য স্কাই’ – আরব সাগরের বুকে এক স্থাপত্যের বিস্ময়

    অভিনেতা জন আব্রাহামের বান্দ্রার আধুনিক পেন্টহাউসটি ‘ভিলা ইন দ্য স্কাই’ নামেই পরিচিত, যা সত্যিই এর নামের যথার্থতা প্রমাণ করে। এটি কেবল একটি বাসস্থান নয়, বরং স্থাপত্যের এক অসাধারণ নিদর্শন, যার নকশা করেছেন তার ভাই, খ্যাতিমান স্থপতি অ্যালান আব্রাহাম। ৬০ কোটি রুপি মূল্যের এই পেন্টহাউসটি সপ্তম ও অষ্টম তলা জুড়ে বিস্তৃত এবং এর আয়তন প্রায় চার হাজার বর্গফুট।

    এই বিলাসবহুল আবাসনের প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলোর মধ্যে রয়েছে এর খোলা ছাদ, সুউচ্চ ছাদবেষ্টনী এবং প্রশস্ত বারান্দা, যা মুম্বাইয়ের আকাশরেখা ও আরব সাগরের এক মনোরম প্যানোরামিক দৃশ্য উপহার দেয়। অন্দরসজ্জায় সর্বত্র ‘ফ্লোর-টু-সিলিং’ কাঁচের দেয়াল ব্যবহার করা হয়েছে, যা ভেতরের ও বাইরের পরিবেশের মধ্যে এক নির্বিঘ্ন সংযোগ স্থাপন করে। এর ফলে, বাড়ির যেকোনো প্রান্ত, এমনকি মূল শোবার ঘর থেকেও আরব সাগরের দিগন্তবিস্তৃত নীলিমার মন মুগ্ধ করা সৌন্দর্য নিরবচ্ছিন্নভাবে উপভোগ করা যায়। জন আব্রাহামের এই পেন্টহাউসটি আধুনিকতা, আরাম এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক নিখুঁত সমন্বয়, যা তাকে শহরের কোলাহল থেকে দূরে এক নির্জন স্বর্গের অনুভূতি দেয়।

    Recent Articles

    Related Stories

    Leave A Reply

    Please enter your comment!
    Please enter your name here