More

    ভারতীয় প্রযোজকের অর্থ আত্মসাত? জবাবে তানজিন তিশার বিবৃতি

    সম্প্রতি ভারতীয় বাংলা চলচ্চিত্র ‘ভালোবাসার মরশুম’–এ অভিনয় সংক্রান্ত এক বিতর্ককে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অভিনেত্রী তানজিন তিশাকে ঘিরে নানা তথ্য ও আলোচনা ঘুরপাক খাচ্ছে। এই বিতর্কের কেন্দ্রে রয়েছেন ভারতীয় প্রযোজক সরফুল ধাবক, যিনি তিশার বিরুদ্ধে অগ্রিম পারিশ্রমিক ফেরত না দেওয়ার গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন। এমন এক পরিস্থিতিতে, জনসমক্ষে নিজের সম্মান ও কর্মজীবনের প্রতি ওঠা এই অভিযোগ খণ্ডন করতে তানজিন তিশা একটি আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দিয়েছেন, যেখানে তিনি তার অবস্থান অত্যন্ত স্পষ্ট এবং দৃঢ়ভাবে তুলে ধরেছেন।

    নিজের বিবৃতিতে জনপ্রিয় এই অভিনেত্রী জোর দিয়ে বলেছেন যে, সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারিত সমস্ত অভিযোগ পুরোপুরি মিথ্যা, বিভ্রান্তিকর এবং তার সুদীর্ঘ কর্মজীবনে ক্ষতিসাধনের উদ্দেশ্যে ছড়ানো। তিনি দাবি করেন, এই অভিযোগগুলোর কোনো বাস্তব ভিত্তি নেই এবং এগুলো একপেশে তথ্য দিয়ে তার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার অপচেষ্টা মাত্র।

    চুক্তি অনুযায়ী ভিসার ব্যবস্থা প্রযোজনা সংস্থার দায়িত্ব ছিল, আমার নয়

    তানজিন তিশা তার বিবৃতিতে চুক্তিপত্রের খুঁটিনাটি তুলে ধরেছেন। তিনি জানান, এই চলচ্চিত্রটির জন্য চুক্তিবদ্ধ হওয়ার আগে একজন অভিজ্ঞ আইনজীবীর মাধ্যমে চুক্তিপত্রটি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যাচাই করানো হয়েছিল। চুক্তিপত্রে স্পষ্টভাবে উল্লেখ ছিল যে, বিদেশভ্রমণ, ভিসা সংগ্রহ, ফ্লাইট বুকিং, এবং শুটিংয়ের সময় শিল্পীর থাকা-খাওয়ার সম্পূর্ণ দায়িত্ব প্রযোজক ও পরিচালকের উপর বর্তাবে। তিশার ভাষায়, “এটি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক যে তারা আমার ভিসার ব্যবস্থা করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে চেষ্টা করেও ভিসা পেতে পারিনি, যা একটি আন্তর্জাতিক প্রোজেক্টের জন্য অপরিহার্য।”

    তিনি আরও উল্লেখ করেন, চুক্তি অনুযায়ী ভিসাসংক্রান্ত সকল দায়িত্ব পরিচালক ও প্রযোজনা সংস্থার ছিল। এই ব্যর্থতার দায়ভার সম্পূর্ণরূপে তাদের এবং এর কোনো অংশেই তিনি দায়ী নন। দীর্ঘ প্রায় দুই মাস ধরে তানজিন তিশা ভিসার অপেক্ষায় ছিলেন। এই দীর্ঘ অপেক্ষার পর তিনি জানতে পারেন যে, তার অজ্ঞাতেই এবং ভিসার বিষয়টি সুরাহা না করেই প্রযোজনা সংস্থা অন্য একজন শিল্পীকে নিয়ে ছবির শুটিং শুরু করে দিয়েছে। এই অপ্রত্যাশিত ও একতরফা সিদ্ধান্তের কারণে তিনি বাধ্য হয়ে প্রজেক্টটি থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত নেন, যা তার পেশাদারিত্বের পরিচায়ক।

    অগ্রিম অর্থ ফেরত দেওয়ার কোনো বাধ্যবাধকতা চুক্তিতে নেই

    প্রযোজকের অভিযোগের অন্যতম প্রধান দিক হলো, তানজিন তিশা অগ্রিম অর্থ ফেরত দিতে রাজি না হওয়ায় এই দ্বন্দ্বের সূত্রপাত হয়েছে। এই গুরুতর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তিশা তার অবস্থান ব্যাখ্যা করে বলেন, “আমার সম্পাদিত চুক্তিপত্রে কোথাও এমন কোনো ধারা উল্লেখ নেই যে, পরিচালকের ব্যর্থতার কারণে যদি কাজটি সম্পন্ন না হয়, তবে আমাকে অগ্রিম পারিশ্রমিক ফেরত দিতে হবে।”

    তিনি আইনের প্রতি তার গভীর শ্রদ্ধার কথা পুনর্ব্যক্ত করেন এবং দৃঢ়ভাবে বলেন যে, যদি বাংলাদেশের কোনো আদালত বা আইনগত কর্তৃপক্ষ প্রমাণ করতে পারে যে তিনি এই অর্থ ফেরত দিতে আইনত বাধ্য, তাহলে তিনি অবশ্যই তা ফেরত দেবেন। তার এই বক্তব্য থেকে স্পষ্ট হয় যে, তিনি কোনো চুক্তিবহির্ভূত বা অনৈতিক পথে হাঁটতে ইচ্ছুক নন, বরং আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এই বিতর্কের সম্মানজনক সমাধানের প্রতি আস্থাশীল। এই পুরো বিতর্কে তানজিন তিশা তার পেশাদারিত্ব, আইনি সচেতনতা এবং স্বচ্ছতার উপর জোর দিয়েছেন, যা তার কর্মজীবনের প্রতি ওঠা সকল প্রশ্নকে বিচক্ষণতার সাথে মোকাবিলা করছে।

    Recent Articles

    Related Stories

    Leave A Reply

    Please enter your comment!
    Please enter your name here