বিনোদন জগতের পরিচিত মুখ এবং ছোট পর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী নজরীন তিশা এবার এক চাঞ্চল্যকর আইনি নোটিশের মুখোমুখি হয়েছেন। প্রতারণার অভিযোগ এনে জনৈক নারী উদ্যোক্তা তাঁর বিরুদ্ধে এই আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন, যা বুধবার অভিনেত্রীর বরাবর পাঠানো হয়েছে। এই ঘটনা মিডিয়া পাড়ায় আলোচনার জন্ম দিয়েছে এবং আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এর নিষ্পত্তি হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
অভিযোগের বিস্তারিত প্রেক্ষাপট
অভিযোগকারী ওই নারী উদ্যোক্তার নাম ঝিলিক। তিনি তাঁর অনলাইন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করেন এবং এই ঘটনার মূলে রয়েছে একটি শাড়ি লেনদেন। আইনি নোটিশে নজরীন তিশাকে বাংলাদেশের একজন সুপরিচিত মডেল, অভিনেত্রী এবং টিভি উপস্থাপিকা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, যিনি দীর্ঘকাল ধরে মিডিয়া জগতের সঙ্গে নিবিড়ভাবে জড়িত। অভিনেত্রীর এই পরিচিতি ও তারকখ্যাতির সূত্র ধরেই ঘটনার সূত্রপাত বলে নোটিশে দাবি করা হয়েছে।
নোটিশের ভাষ্যমতে, নজরীন তিশা আমার মক্কেল ঝিলিকের অনলাইন পেজে সংযুক্ত হয়ে বিভিন্ন প্রকার শাড়ি পর্যবেক্ষণ করেন। সেখানে তিনি ২৮ হাজার ৮০০ টাকা বাজার মূল্যের একটি বিশেষ শাড়ি পছন্দ করেন এবং নিজের ভেরিফায়েড ইনস্টাগ্রাম আইডি থেকে সেটি কেনার আগ্রহ প্রকাশ করেন। আমার মক্কেল ঝিলিক, অভিনেত্রীর জনপরিচিতি এবং অবস্থানের প্রতি সরল বিশ্বাসে, শাড়িটি পেজ প্রমোশনের বিনিময়ে তাকে বিনামূল্যে প্রদানের প্রস্তাব দেন। এই চুক্তি অনুযায়ী, শাড়িটি অভিনেত্রীর বাসার ঠিকানায় পৌঁছে দেওয়া হয়, যা চলতি বছরের ১৮ জানুয়ারি সম্পন্ন হয়েছিল।
চুক্তিভঙ্গ ও দীর্ঘসূত্রিতার অভিযোগ
শাড়ি গ্রহণের পর থেকেই জটিলতার শুরু বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে যে, নজরীন তিশা এরপর থেকে বিভিন্ন ভয়েস মেসেজ এবং টেক্সট বার্তার মাধ্যমে শাড়িটি পরিধান করে ‘Aponia’ পেজ প্রমোশনের জন্য বারবার আশ্বস্ত করতে থাকেন। পেজ কর্তৃপক্ষও একাধিকবার অভিনেত্রীকে এই বিষয়ে অনুরোধ জানায়। কিন্তু শাড়ি গ্রহণ করার পর দীর্ঘ দশ মাস অতিবাহিত হয়ে গেলেও, অভিনেত্রী পেজ প্রমোশনের জন্য কোনো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি।
অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, গত ছয় মাসেরও অধিক সময় ধরে নজরীন তিশা পেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কোনো প্রকার যোগাযোগ রক্ষা করেননি। তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে সমস্ত প্রকার কথোপকথন থেকে নিজেকে বিরত রেখেছেন বলে দাবি করা হয়েছে। এমনকি, শাড়িটির জন্য চুক্তি অনুযায়ী পেজ প্রমোশন সম্পন্ন করা বা এর মূল্য পরিশোধ করা – কোনোটির ক্ষেত্রেই তিনি অদ্যাবধি কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি। আমার মক্কেল ঝিলিক একাধিকবার বিভিন্ন উপায়ে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও, অভিনেত্রীর পক্ষ থেকে কোনো প্রকার সাড়া পাওয়া যায়নি, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।
আইনি পদক্ষেপের অন্তর্নিহিত বার্তা
এই আইনি নোটিশে স্পষ্টত বিশ্বাস ভঙ্গ এবং প্রতারণার অভিযোগ আনা হয়েছে, যা একজন জনপরিচিত ব্যক্তির জন্য অত্যন্ত গুরুতর বিষয়। সাধারণত, এমন নোটিশে একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়, যার মধ্যে নোটিশ গ্রহীতাকে উত্থাপিত অভিযোগের বিষয়ে সমাধান বা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হয়। এক্ষেত্রেও, নজরীন তিশাকে হয় শাড়িটির পূর্ণাঙ্গ মূল্য পরিশোধ করতে হবে, অথবা চুক্তি অনুযায়ী পেজ প্রমোশন সম্পন্ন করতে হবে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এই সমস্যার সমাধান না হলে, অভিযোগকারী নারী উদ্যোক্তা ঝিলিক এই বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে সতর্ক করা হয়েছে। এই আইনি প্রক্রিয়াটি এখন কোন পথে মোড় নেয়, তা দেখতে গণমাধ্যম ও সংশ্লিষ্ট মহল আগ্রহী হয়ে আছে।
