More

    ‘বাংলাদেশে এসে প্রচুর ভাত খাইছি! গালটা মোটা হয়ে গেছে’

    সাত মাসের দীর্ঘ বিরতির পর প্রিয় জন্মভূমিতে ফিরে এসেছেন জনপ্রিয় অভিনেতা মনোজ প্রামাণিক। কোরিয়ার বুসান এশিয়ান ফিল্ম স্কুলে চলচ্চিত্র বিষয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের জন্য তিনি দেশ ছেড়েছিলেন। কাকতালীয়ভাবে, তার এই প্রত্যাবর্তনের প্রথম দিনেই ঘটে গেল এক অবিশ্বাস্য ঘটনা — নিজের শেষ সহ-অভিনেত্রী, গুণী অভিনেত্রী তাসনুভা তিশার সঙ্গে তার আকস্মিক পুনর্মিলন। এই অপ্রত্যাশিত সাক্ষাৎ শুধু তাদের দু’জনকেই নয়, বিস্মিত করেছে তাদের অগণিত ভক্তদেরও। পেশাদার কর্মক্ষেত্রে এমন বিরল ঘটনার সাক্ষী হয়ে তারা সম্প্রতি ফেসবুক লাইভে এসে ভক্তদের সঙ্গে ভাগ করে নিলেন তাদের আনন্দময় অনুভূতি।

    দীর্ঘ বিরতির পর অপ্রত্যাশিত পুনর্মিলন

    মনোজ প্রামাণিক ও তাসনুভা তিশার বন্ধুত্ব বিনোদন জগতে বেশ সুপরিচিত। তাদের সম্পর্ক এতটাই সহজ এবং সাবলীল যে তারা একে অপরকে ‘তুই’ সম্বোধন করেন, যা তাদের গভীর আত্মিক বন্ধনেরই পরিচায়ক। কোরিয়ায় পাড়ি জমানোর পূর্বে মনোজের শেষ অভিনয় ছিল তাসনুভা তিশার সঙ্গেই। নিয়তির এক অদ্ভুত খেলায়, দীর্ঘ সাত মাস পর দেশে ফেরার পর তার প্রথম শুটিং সেটেই পুনরায় তাদের দেখা হয়ে গেল। এই ঘটনাটিকে তাসনুভা তিশা কেবল কাকতালীয় নয়, বরং বেশ চমকপ্রদ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

    এই অপ্রত্যাশিত পুনর্মিলনের আনন্দ মুহূর্তটিকে ভক্তদের সঙ্গে ভাগ করে নিতে তারা সিদ্ধান্ত নেন একটি ফেসবুক লাইভ করার। প্রাণবন্ত এই আড্ডায় উঠে আসে তাদের অভিজ্ঞতা, অনুভূতি এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে নানা কথা।

    লাইভে এসে তাসনুভা তিশা তার উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেন, “আজকে আমার কাছে খুবই আনন্দের দিন মনে হচ্ছে। মনোজ বাংলাদেশে এসেছে, আর সরাসরি শুটিং সেটে এসেই আমাদের দেখা। আমি তো একেবারেই জানতাম না যে সে দেশে ফিরেছে। ব্যাপারটা আমার জন্য ছিল সম্পূর্ণ সারপ্রাইজিং। যে কারণে মনে হলো, আমরা একটা ফেসবুক লাইভ করি, যাতে সবাই আমাদের এই আনন্দ ভাগ করে নিতে পারে।”

    অন্যদিকে, লাইভে মনোজ প্রামাণিক তার আগমন এবং এই বিশেষ মুহূর্ত নিয়ে কথা বলেন। তিনি জানান, “আমি পরশু এসেছি দেশে। এসেই ফেসবুকে জানিয়েছিলাম যে আমি দেশে আছি, কিন্তু তুই হয়তো সেটা দেখিসনি।” তার কথায় ফুটে ওঠে একই রকম বিস্ময়। তিনি আরও বলেন, “যা–ই হোক, মজার ব্যাপার হচ্ছে, আমরা কেউই জানতাম না যে আজ আমাদের একসঙ্গে শুটিং। আমার জন্য এটি দেশে ফেরার পর প্রথম শুটিং। আমি সত্যি বলতে, কোরিয়ায় থাকার সময় শুটিংকে খুব মিস করেছি। আর সবচেয়ে মজার বিষয় হলো, কোরিয়ায় যাওয়ার আগেও আমাদের শেষ শুটিং ছিল একসঙ্গে, আর ফিরে এসেও আমাদেরই একসঙ্গে প্রথম শুটিং হচ্ছে! এই বিষয়টা সত্যিই দারুণ লেগেছে।”

    আড্ডার এক ফাঁকে তাসনুভা তিশা মন্তব্য করেন, কোরিয়া থেকে ফেরার পর মনোজকে নাকি অনেক বেশি সতেজ ও ঝরঝরে লাগছে। নিজের প্রশংসা শুনে মনোজ হাসতে হাসতে বলেন, “মাত্র দুই দিন বাংলাদেশে এসে প্রচুর ভাত খাইছি, এই জন্যই হয়তো গালটা একটু মোটা হয়ে গেছে। এটা অন্যভাবে নিস না, সব আবার ঠিক করে ফেলব।” তাদের এই খুনসুটিপূর্ণ কথোপকথন লাইভটিকে আরও প্রাণবন্ত করে তোলে।

    ফেসবুক থেকে আয়: তারকাদের ভিন্ন মত

    বর্তমান সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, বিশেষ করে ফেসবুক লাইভ, অনেকের কাছে আয়ের একটি উৎস হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই তারকা জুটির কথোপকথনে এই প্রসঙ্গটিও উঠে আসে। তাসনুভা তিশা লাইভে বলেন, “আমি মাঝেমধ্যেই লাইভ করি। অনেকেই হয়তো মনে করেন, লাইভ করে টাকা কামাই, কিন্তু সত্যি বলতে, আমার ফেসবুক পেজের মনিটাইজেশনই নেই।”

    তার পাশ থেকে মনোজ প্রামাণিক যোগ করেন, “আমার ফেসবুক মনিটাইজ করা আছে; কিন্তু মজার ব্যাপার হলো, আমি কোনো আয় করি না। আমি কোনো রকম টাকার জন্য পোস্ট করি না বা লাইভ করি না।” এই মন্তব্যগুলো তাদের পেশাদারিত্ব এবং ভক্তদের সঙ্গে তাদের সম্পর্কের সততাকে তুলে ধরে। যদিও তিশার শেষ মন্তব্যটি অসমাপ্ত ছিল (“তুই তো”), তবে তাদের কথোপকথনের সারমর্ম ছিল স্পষ্ট: খ্যাতি বা অর্থ উপার্জনের চেয়ে তাদের কাছে সম্পর্কের সততা এবং শিল্পের প্রতি ভালোবাসা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

    মনোজ প্রামাণিক এবং তাসনুভা তিশার এই আকস্মিক পুনর্মিলন এবং তাদের সাবলীল কথোপকথন আবারও প্রমাণ করে যে, বিনোদন জগতের চাপ আর ব্যস্ততার মাঝেও সত্যিকারের বন্ধুত্ব এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধা কতটা মূল্যবান। সাত মাস পর এমন একটি আনন্দঘন মুহূর্ত তাদের ভক্তদের মধ্যেও দারুণ কৌতূহল ও উদ্দীপনার সৃষ্টি করেছে। আশা করা যায়, এই দুই জনপ্রিয় তারকার একসঙ্গে আরও নতুন নতুন কাজ দর্শক শীঘ্রই দেখতে পাবেন।

    Recent Articles

    Related Stories

    Leave A Reply

    Please enter your comment!
    Please enter your name here