More

    ভাই লতিফ সিদ্দিকীর জামিনের পর যা বললেন কাদের সিদ্দিকী

    বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থার প্রতি সাধারণ মানুষের ও রাজনীতিবিদদের আস্থা অটুট রয়েছে, যার সাম্প্রতিক প্রমাণ মিলেছে সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীর জামিনে। এমনটাই অভিমত ব্যক্ত করেছেন তার ভাই, বীর মুক্তিযোদ্ধা বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী। হাইকোর্ট কর্তৃক আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীকে জামিন প্রদানের পর তিনি বিচার বিভাগকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন, যা দেশের বিচারিক প্রক্রিয়ার প্রতি তার গভীর আস্থার প্রতিফলন।

    বিচার বিভাগের প্রতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর আস্থা

    বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) উচ্চ আদালত থেকে আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীর জামিন মঞ্জুর হওয়ার পরপরই বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী সংবাদমাধ্যমকে জানান, দেশের বিচার ব্যবস্থার ওপর তার অবিচল আস্থা রয়েছে। তিনি বলেন, “বিচার বিভাগের প্রতি দেশের মানুষের ও আমাদের আস্থা আছে। আমার ভাই লতিফ সিদ্দিকীর জামিন তার প্রমাণ। আমি বিচার বিভাগকে ধন্যবাদ জানাই।” এই মন্তব্য বিচার বিভাগের স্বাধীনতা এবং ন্যায়বিচারের প্রত্যাশাকে তুলে ধরে। একটি স্পর্শকাতর মামলায় জামিন প্রাপ্তিকে তিনি বিচারিক নিরপেক্ষতার একটি উদাহরণ হিসেবে উপস্থাপন করেছেন, যা আইনের শাসনের প্রতি তার ব্যক্তিগত অঙ্গীকারকেও প্রতিফলিত করে।

    হাইকোর্টের জামিন আদেশ ও পরবর্তী পদক্ষেপ

    রাজধানীর শাহবাগ থানায় দায়েরকৃত সন্ত্রাসবিরোধী আইনের একটি মামলায় সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীকে জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি এ এস এম আব্দুল মোবিন এবং বিচারপতি সগীর হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) এই জামিন আদেশ মঞ্জুর করেন। এই আদেশের ফলশ্রুতিতে আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীর কারামুক্তিতে আর কোনো আইনি বাধা থাকছে না বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী জেড আই খান পান্না। এটি তার দীর্ঘদিনের কারাবাসের অবসানের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

    তবে, এই জামিন আদেশ নিয়ে রাষ্ট্রপক্ষের ভিন্ন মত রয়েছে। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে উপস্থিত ছিলেন সহকারি অ্যাটর্নি জেনারেল ইব্রাহিম খলিল এবং আল আমিন হোসেন। সহকারি অ্যাটর্নি জেনারেল ইব্রাহিম খলিল জানান, হাইকোর্টের এই জামিন আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করা হবে। এর মাধ্যমে বোঝা যাচ্ছে যে রাষ্ট্রপক্ষ এই মামলার আইনি প্রক্রিয়া আরও সামনে এগিয়ে নিতে বদ্ধপরিকর, যা মামলাটির ভবিষ্যৎ গতিপ্রবাহে একটি নতুন মাত্রা যোগ করবে।

    মামলার পূর্বাপর প্রেক্ষাপট

    এর আগে, গত ২৯ আগস্ট একই সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কার্জনসহ মোট ১৬ জনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সারাহ ফারজানা হকের আদালত এই আদেশ দিয়েছিলেন। শাহবাগ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আমিরুল ইসলাম এই মামলাটি দায়ের করেছিলেন। এই মামলার আসামিদের মধ্যে আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী এবং অধ্যাপক কার্জন ছাড়াও আরও যারা ছিলেন, তাদের নামগুলো হলো:

    • মো. আব্দুল্লাহ আল আমিন (৭৩)
    • মঞ্জুরুল আলম (৪৯)
    • কাজী এটিএম আনিসুর রহমান বুলবুল (৭২)
    • গোলাম মোস্তফা (৮১)
    • মো. মহিউল ইসলাম ওরফে বাবু (৬৪)
    • মো. জাকির হোসেন (৭৪)
    • মো. তৌছিফুল বারী খাঁন (৭২)
    • মো. আমির হোসেন সুমন (৩৭)
    • মো. আল আমিন (৪০)
    • মো. নাজমুল আহসান (৩৫)
    • সৈয়দ শাহেদ হাসান (৩৬)
    • মো. শফিকুল ইসলাম দেলোয়ার (৬৪)
    • দেওয়ান মোহম্মদ আলী (৫০)
    • মো. আব্দ

    এই জামিন আদেশটি দেশের রাজনৈতিক ও বিচারিক অঙ্গনে একটি আলোচনার জন্ম দিয়েছে। একদিকে যেমন বিচার ব্যবস্থার প্রতি আস্থা প্রকাশের বিষয়টি উঠে এসেছে, তেমনি অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষের আপিলের সিদ্ধান্তের ফলে মামলাটির চূড়ান্ত পরিণতি নিয়েও জনমনে কৌতূহল সৃষ্টি হয়েছে। এটি বিচারিক প্রক্রিয়ার জটিলতা এবং আইনের প্রতিটি ধাপের গুরুত্বকে পুনরায় সামনে নিয়ে এসেছে।

    Recent Articles

    Related Stories

    Leave A Reply

    Please enter your comment!
    Please enter your name here