More

    ‘অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনসহ মানুষের মৌলিক মানবাধিকার নিশ্চিত করতে হবে’

    ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর, যা জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস হিসেবে সমাদৃত, বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় অধ্যায়। এই বিশেষ দিনটিকে স্মরণ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এক গুরুত্বপূর্ণ বাণী দিয়েছেন, যেখানে তিনি দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপট ও ১৯৭৫ সালের সিপাহী-জনতার বিপ্লবের তাৎপর্য তুলে ধরেছেন। তিনি জোর দিয়ে বলেছেন যে, ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার মহিমান্বিত আত্মত্যাগের ফলস্বরূপ তৎকালীন ফ্যাসিবাদী শক্তি দেশ ত্যাগে বাধ্য হয়েছিল এবং এর মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রের মুক্তির নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়। তবে, এই গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা এখনও তার চূড়ান্ত লক্ষ্যে পৌঁছায়নি উল্লেখ করে তিনি মন্তব্য করেন যে, চূড়ান্ত গণতন্ত্রের চর্চার জন্য একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন এবং মানুষের মৌলিক মানবাধিকার নিশ্চিত করা অপরিহার্য পূর্বশর্ত।

    বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক আনুষ্ঠানিক বাণীতে তারেক রহমান এই গভীর পর্যবেক্ষণ প্রকাশ করেন। তিনি দেশবাসীসহ সকল শুভানুধ্যায়ীকে এই তাৎপর্যপূর্ণ দিবসের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জ্ঞাপন করেন এবং সকলের সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করেন।

    জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসের ঐতিহাসিক তাৎপর্য

    তারেক রহমান তার বাণীতে আরও বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বরের সিপাহী-জনতার বিপ্লব কেবল একটি মোড় পরিবর্তনকারী ঘটনাই ছিল না, বরং এটি ছিল এদেশে আধিপত্যবাদ বিরোধী জাতীয়তাবাদী রাজনীতির এক গৌরবময় অভ্যুদয়ের সূচনা। এই ঐতিহাসিক বিপ্লবের মাধ্যমেই দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব সুরক্ষিত হয়েছিল, যা জাতির অস্তিত্ব রক্ষায় এক অসামান্য ভূমিকা রাখে।

    তিনি গভীরভাবে স্মরণ করে বলেন, ১৯৭৫ সালের এই বিশেষ দিনে অগণিত দেশপ্রেমিক সিপাহী ও সাধারণ জনতা দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে রাজপথে নেমে এসেছিলেন। তাদের মূল অঙ্গীকার ছিল জাতীয় স্বাধীনতাকে রক্ষা করা এবং ভূলুণ্ঠিত গণতন্ত্রকে আবারও পুনরুজ্জীবিত করা। এই মহৎ উদ্দেশ্য নিয়েই সংঘটিত হয়েছিল ৭ নভেম্বরের এই ঐতিহাসিক বিপ্লব, যা এর তাৎপর্যকে আরও বহুগুণে বাড়িয়ে তোলে।

    স্বাধীনতাত্তোর প্রেক্ষাপট ও বাকশালের উত্থান

    তারেক রহমান তার বাণীতে স্বাধীনতাত্তোর বাংলাদেশের এক অন্ধকার অধ্যায়ের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন যে, সেই সময়কার ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী কেবল নিজেদের সংকীর্ণ স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য দেশকে আধিপত্যবাদের ভয়াবহ থাবার মুখে ঠেলে দিয়েছিল। তাদের প্রধান লক্ষ্য ছিল ক্ষমতাকে চিরস্থায়ীভাবে কুক্ষিগত করে রাখা। এই অপচেষ্টার অংশ হিসেবেই তারা একদলীয় বাকশাল গঠন করে এবং দেশের গণতন্ত্রকে নির্মমভাবে হত্যা করে। এই পদক্ষেপগুলি জাতির ভবিষ্যৎকে ঘোর অনিশ্চয়তার মুখে ঠেলে দেয়।

    তিনি আরও যোগ করেন, বাকশালী সরকার চরম অগণতান্ত্রিক ও ফ্যাসিবাদী পন্থায় মানুষের ন্যায়সংগত অধিকারগুলোকে নির্লজ্জভাবে হরণ করে। দেশমাতৃকার যখন এই চরম সংকটকাল চলছিল, ঠিক তখনই, ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর, কতিপয় কুচক্রী মহল মহান স্বাধীনতার ঘোষক, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে সপরিবারে ক্যান্টনমেন্টে বন্দি করে। জাতির এই গভীর সংকটের মুহূর্তে, যখন চারিদিকে হতাশা আর অনিশ্চয়তা, ঠিক তখনই ৭ নভেম্বরের সিপাহী-জনতার বিপ্লব এক আলোকবর্তিকা হয়ে আসে এবং দেশকে এক ভয়াবহ পরিণতি থেকে রক্ষা করে। এই বিপ্লব কেবল একটি বিদ্রোহ ছিল না, এটি ছিল পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে জাতিকে মুক্ত করার এক সাহসী ও তাৎপর্যপূর্ণ পদক্ষেপ।

    Recent Articles

    Related Stories

    Leave A Reply

    Please enter your comment!
    Please enter your name here