নির্বাচন কমিশনে (ইসি) রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধনের দাবিতে আমরণ অনশন কর্মসূচিতে নেমেছেন আমজনতার দল-এর সাধারণ সম্পাদক ও তরুণ নেতা তারেক রহমান। টানা ১২৫ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে এই অনশন চালিয়ে যাওয়ায় তাঁর শারীরিক অবস্থা বর্তমানে অত্যন্ত সঙ্গীন এবং ক্রমেই অবনতির দিকে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে গতকাল শনিবার (৯ নভেম্বর) দুপুর ১টা ৪০ মিনিটে তাঁকে দেখতে ছুটে যান বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন, যা রাজনৈতিক মহলে বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনশন ও শারীরিক অবস্থার অবনতি
নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কাছে ‘আমজনতার দল’ নামে একটি নতুন রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন না পাওয়ার প্রতিবাদে তারেক রহমান আমরণ অনশন শুরু করেন। তাঁর অনশন ইতোমধ্যে ১২৫ ঘণ্টা অতিক্রম করেছে। দীর্ঘ সময় ধরে খাদ্য ও পানীয় গ্রহণ না করায় তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে থাকা অবস্থায় তাঁর শরীরে ইতোমধ্যে চারটি স্যালাইন পুশ করা হয়েছে, যা তাঁর আশঙ্কাজনক শারীরিক অবস্থার ইঙ্গিত বহন করে।
রবিবার (৯ নভেম্বর) দুপুরে ইসির প্রধান ফটকের সামনে দেখা যায়, ‘১২৫ ঘণ্টা অনশনের’ প্ল্যাকার্ড হাতে শুয়ে আছেন তারেক রহমান। টানা তিন দিন একই পোশাকে থাকা এই নেতার দুর্বল দেহ স্পষ্টতই চোখে পড়ছিল। শারীরিক অবস্থার এতটাই অবনতি হয়েছে যে, তাঁর রক্তচাপ উদ্বেগজনক হারে কমে গেছে। এমনকি তিনি স্বাভাবিকভাবে কথা বলার ক্ষমতাও হারিয়েছেন; বর্তমানে ইশারা-ইঙ্গিতেই তাঁকে মনের ভাব প্রকাশ করতে হচ্ছে, যা তাঁর চরম দুর্বলতার প্রমাণ।
দলের উদ্বেগ ও দেশবাসীর কাছে প্রার্থনা
আমজনতার দল-এর পক্ষ থেকে প্রকাশিত এক জরুরি বিবৃতিতে তারেক রহমানের শারীরিক অবস্থা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “সংগ্রামী তরুণ নেতা তারেক রহমান বর্তমানে আমরণ অনশন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণরত অবস্থায় গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তিনি এখন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে অবস্থান করছেন। তাঁর শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক।” এই কঠিন মুহূর্তে আমজনতার দল দেশবাসীর কাছে তারেক রহমানের দ্রুত সুস্থতার জন্য আন্তরিক দোয়া ও আশীর্বাদ কামনা করেছে।
নির্বাচন কমিশনের নীরবতা নিয়ে ক্ষোভ
দলটির পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়েছে যে, তারেক রহমানের আমরণ অনশন কর্মসূচির ১২২ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে এখনো কোনো ইতিবাচক সাড়া মেলেনি। আমজনতার দল এই বিষয়ে তাদের তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। বিবৃতিতে বলা হয়, “গণদাবি ও নিবন্ধনের ন্যায্য প্রশ্নে নীরব নির্বাচন কমিশনের এই উদাসীনতা জনমনে গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে।”
আমজনতার দল-এর কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফ বিল্লাহ এক বিবৃতিতে বলেন, “তারেক রহমান শুধু আমাদের দলের সাধারণ সম্পাদক নন, তিনি জনগণের ভোটের অধিকার, রাজপথে আন্দোলনের একজন অগ্রণী সৈনিক।” তাঁর এই অনশন কেবল দলের নিবন্ধনের দাবি নয়, বরং জনগণের মৌলিক গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের প্রতীক হয়ে উঠেছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
