More

    অবশেষে বাংলাদেশ দলে ডাক পেলেন কিউবা মিচেল

    বাংলাদেশের ফুটবল অঙ্গনে দীর্ঘদিনের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা সেই কিউবা মিচেল-এর প্রতীক্ষার অবসান হলো। অবশেষে জাতীয় দলের প্রাথমিক স্কোয়াডে ডাক পেয়ে তার স্বপ্নের এক ধাপ পূরণ হলো। লাল-সবুজ জার্সি গায়ে মাঠে নামার যে আকাঙ্ক্ষা তিনি লালন করে আসছিলেন, চোটের কারণে সৃষ্ট এক অপ্রত্যাশিত সুযোগ সেই আকাঙ্ক্ষাকে বাস্তবতার পথে এগিয়ে দিল।

    দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান: চোট খুলে দিল স্বপ্নের দুয়ার

    গত ৩০ অক্টোবর থেকে নভেম্বরের উইন্ডো অনুশীলন ক্যাম্প শুরু হওয়ার পর থেকেই ফুটবলপ্রেমীদের নজর ছিল জাতীয় দলের স্কোয়াড ঘোষণার দিকে। গত ৫ নভেম্বর যখন ২৭ সদস্যের প্রাথমিক দল ঘোষণা করা হয়, তখন অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগিয়েছিল কিউবা মিচেল-এর অনুপস্থিতি। প্রাথমিকভাবে ডাক না পেলেও, নিয়তির এক অদ্ভুত খেলায় এবং দলের ভেতরের চোট পরিস্থিতিই তার ভাগ্যের দুয়ার খুলে দিয়েছে।

    কোচ হাভিয়ের কাবরেরা তার প্রাথমিক পরিকল্পনা অনুযায়ী ফরোয়ার্ড ইব্রাহিম এবং ডিফেন্ডার রহমত মিয়া-কে দলে রেখেছিলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, তাদের চোটের অবস্থার কোনো উল্লেখযোগ্য উন্নতি না হওয়ায় কোচ বাধ্য হয়েছেন স্কোয়াডে পরিবর্তন আনতে। এই পরিবর্তিত পরিস্থিতিতেই প্রতিভাবান কিউবা মিচেল-কে জাতীয় দলের প্রাথমিক শিবিরে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তার সাথে ফর্টিসের প্রতিশ্রুতিশীল তরুণ ফুটবলার মোরশেদ আলী-ও এই সুযোগ পেয়েছেন, যা দলের গভীরতা বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

    ফুটবল ক্যারিয়ারের গতিপথ ও ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ

    কিউবা মিচেল তার ফুটবল ক্যারিয়ারের শুভ সূচনা করেছিলেন ইংল্যান্ডের ঐতিহ্যবাহী সান্ডারল্যান্ড ক্লাব-এ, যা তার প্রতি প্রত্যাশার পারদকে আরও উঁচু করেছে। চলতি বছরের মাঝামাঝি সময় থেকেই বাংলাদেশের জার্সি গায়ে তাকে মাঠে নামানোর ব্যাপারে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়। তবে সেসময় পাসপোর্ট ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন না হওয়ার কারণে তিনি জাতীয় দলের হয়ে খেলার সুযোগ থেকে বঞ্চিত ছিলেন, যা তার ভক্তদের মধ্যে কিছুটা হতাশা তৈরি করেছিল।

    পরবর্তীকালে, তিনি বাংলাদেশের অন্যতম সেরা ক্লাব বসুন্ধরা কিংস-এ যোগ দেন। তবে ক্লাবে পর্যাপ্ত ম্যাচ খেলার সুযোগ না পাওয়ায় তখনও জাতীয় দলে তার ডাক মেলেনি। এবার, দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ইব্রাহিম-এর দুর্ভাগ্যজনক চোটই কিউবা-র জন্য জাতীয় দলের দরজা খুলে দেওয়ার মূল অনুঘটক হিসেবে কাজ করেছে। এটি নিঃসন্দেহে তার ক্যারিয়ারের একটি গুরুত্বপূর্ণ বাঁক।

    তবে, জাতীয় দলের লাল-সবুজ জার্সি গায়ে চূড়ান্তভাবে মাঠে নামতে হলে কিউবা মিচেল-কে আরও অনেক কঠিন ধাপ অতিক্রম করতে হবে। এটি কেবলই প্রাথমিক স্কোয়াডের একটি অংশ। এখান থেকে মূল দলে জায়গা করে নেওয়ার চ্যালেঞ্জটি এখনো বাকি। কঠোর অনুশীলন, ফিটনেস ধরে রাখা এবং নিজের সক্ষমতা প্রমাণ করেই তাকে চূড়ান্ত দলে তার স্থান নিশ্চিত করতে হবে। প্রাথমিক স্কোয়াড থেকে বাদ পড়ার সম্ভাবনা এখনো সম্পূর্ণভাবে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না, যা এই স্বপ্নপূরণের যাত্রাপথকে আরও কঠিন ও চ্যালেঞ্জিং করে তুলেছে। দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করার এই সুযোগকে কাজে লাগাতে কিউবা-কে তার সেরাটা দিতে হবে।

    Recent Articles

    Related Stories

    Leave A Reply

    Please enter your comment!
    Please enter your name here