সম্প্রতি বাংলাদেশে নিযুক্ত জার্মানির রাষ্ট্রদূত রুডিগার লোটজের সঙ্গে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে দেশের গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। সোমবার (২০ অক্টোবর) বিকালে অনুষ্ঠিত এই ফলপ্রসূ আলোচনায় উভয় দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদার করাসহ বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য জার্মানিতে উচ্চশিক্ষার সুযোগ সম্প্রসারণের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াদি স্থান পায়।
গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও সরকারি অবস্থান
গণমাধ্যমের ওপর সরকারের কোনো প্রকার চাপ বা প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে দৃঢ়ভাবে উল্লেখ করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। তিনি জোর দিয়ে বলেছেন যে, বাংলাদেশের গণমাধ্যম সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে এবং সরকারের গঠনমূলক সমালোচনা করতে কোনো প্রকার দ্বিধা করছে না। উপদেষ্টার ভাষ্যমতে, “সরকারের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমের ওপর কোনো ধরনের চাপ নেই।” তিনি আরও স্পষ্ট করেন যে, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় থেকে সরাসরি ফোন করে কোনো গণমাধ্যমের কার্যক্রমে হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে না। এই মন্তব্য গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং স্বাধীন সাংবাদিকতার প্রতি সরকারের অঙ্গীকারকে পুনর্ব্যক্ত করে।
আসন্ন নির্বাচন প্রসঙ্গে আশ্বাস
বৈঠকে রাষ্ট্রদূত লোটজকে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সম্পর্কে অবহিত করে মাহফুজ আলম নিশ্চিত করেন যে, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি দ্ব্যর্থহীনভাবে জানান যে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের বিষয়ে কোনো ধরনের অনিশ্চয়তা নেই। সরকারের এই সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা ও অঙ্গীকার দেশের গণতান্ত্রিক ধারা বজায় রাখার প্রতি তার প্রতিশ্রুতির পরিচায়ক।
দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ও শিক্ষাবিনিময়
সাক্ষাৎকালে জার্মানির রাষ্ট্রদূত রুডিগার লোটজ বাংলাদেশ ও জার্মানির মধ্যে বিদ্যমান ঐতিহাসিক সম্পর্ককে আরও সুদৃঢ় করার আগ্রহ প্রকাশ করেন। বিশেষ করে, অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ককে নতুন মাত্রায় উন্নীত করার বিষয়ে তিনি গুরুত্বারোপ করেন। এছাড়াও, দুই দেশের মধ্যে শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিনিময়ের অংশ হিসেবে জার্মানির বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার সুযোগ কীভাবে আরও সম্প্রসারিত করা যায়, তা নিয়েও ফলপ্রসূ আলোচনা হয়। এই ধরনের শিক্ষাবিনিময় কর্মসূচি দুই দেশের জনগণের মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়া ও সম্পর্ক উন্নয়নে সহায়ক হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
আলোচনা চলাকালীন জার্মান দূতাবাসের রাজনৈতিক ও প্রেস অফিসার শারনিলা নুজহাত কবিরও উপস্থিত ছিলেন। এই বৈঠকটি বাংলাদেশ ও জার্মানির মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক এবং পারস্পরিক সহযোগিতার নতুন দিগন্ত উন্মোচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে পর্যবেক্ষক মহল মনে করছে।
