দেশের রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে যখন সম্ভাব্য আগাম নির্বাচন ঘিরে আলোচনা তুঙ্গে, ঠিক সেই সময়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর পক্ষ থেকে গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য এসেছে। দলটির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং এর সুষ্ঠু আয়োজন নিয়ে এক কঠোর বার্তা দিয়েছেন। তিনি স্বৈরাচারী শক্তির অপতৎপরতা সম্পর্কে সতর্ক করেছেন, যা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করতে পারে বলে তাঁর আশঙ্কা।
আসন্ন নির্বাচন ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার চ্যালেঞ্জ
রবিবার, ২৬ অক্টোবর তারিখে, জয়নুল আবদিন ফারুক জাতীয়তাবাদী সৃজনশীল প্রকাশনা পরিষদের নেতৃবৃন্দকে সাথে নিয়ে দলের প্রতিষ্ঠাতা, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সমাধিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এই শ্রদ্ধাজ্ঞাপন অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি বলেন যে, একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আগামী ফেব্রুয়ারি মাসেই নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। তবে, এই প্রস্তুতি সত্ত্বেও একটি অশুভ শক্তির চক্রান্ত চলছে বলে তিনি জানান। ফারুকের স্পষ্ট ভাষায়, “স্বৈরাচারের প্রেতাত্মারা” এই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বানচাল করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। তিনি এমন অগণতান্ত্রিক শক্তির বিরুদ্ধে সকলকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান।
একটি অর্থবহ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করার গুরুত্ব তুলে ধরে বিএনপির এই শীর্ষ নেতা আরও বলেন, “একটি সফল ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত করার জন্য সরকারের বর্তমান কার্যক্রমকে অবশ্যই সফল করতে হবে।” তাঁর মতে, নির্বাচনকে কেবল একটি আনুষ্ঠানিকতা হিসেবে দেখলে চলবে না, বরং এর ফলাফল যেন প্রকৃত জনমতের প্রতিফলন ঘটায়, তা নিশ্চিত করতে হবে। এর পাশাপাশি, গণতন্ত্রের এই অন্যতম ভিত্তি সম্পর্কে দেশের প্রতিটি প্রান্তে সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক সচেতনতা তৈরি করা অত্যাবশ্যক। নির্বাচন প্রক্রিয়ায় জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ এবং তাদের ভোটাধিকার সম্পর্কে অবহিতকরণকে তিনি বিশেষভাবে গুরুত্ব দেন, যা একটি সুস্থ গণতন্ত্রের জন্য অপরিহার্য।
শিক্ষা ব্যবস্থার দলীয়করণের গুরুতর অভিযোগ
নির্বাচন প্রসঙ্গ ছাড়াও জয়নুল আবদিন ফারুক দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে একটি গুরুতর অভিযোগ উত্থাপন করেন। তিনি মন্তব্য করেন যে, গত পনেরো বছরের দীর্ঘ সময় ধরে বাংলাদেশের পাঠ্যপুস্তককেও দলীয়করণের চেষ্টা করা হয়েছে। তাঁর এই অভিযোগ ইঙ্গিত দেয় যে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে শিশুদের মননে একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক মতাদর্শ চাপিয়ে দেওয়ার অপপ্রয়াস চালানো হয়েছে। দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের আদর্শ ও শিক্ষাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহারের এই প্রবণতা অত্যন্ত উদ্বেগজনক এবং জাতির দীর্ঘমেয়াদী উন্নতির জন্য ক্ষতিকর বলে তিনি উল্লেখ করেন। এই ধরনের কর্মকাণ্ড জাতীয় ঐক্য ও সাংস্কৃতিক মূল্যবোধের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে বলে তাঁর অভিমত।
