বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা সুদৃঢ়করণে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিপুল পরিমাণ গম আমদানির ধারাবাহিকতা বজায় রয়েছে। সম্প্রতি, যুক্তরাষ্ট্র থেকে আগত ৬০ হাজার ৮৭৫ মেট্রিক টন গমবাহী একটি জাহাজ মোংলা বন্দরের বহিঃনোঙরে সফলভাবে নোঙর করেছে। এটি চলতি আমদানিকৃত গমের তৃতীয় বৃহৎ চালান, যা দেশের খাদ্য মজুদকে আরও শক্তিশালী করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
আমদানির প্রেক্ষাপট ও চুক্তি
গত ১৫ নভেম্বর, বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র সরকারের মধ্যে স্বাক্ষরিত একটি ঐতিহাসিক সমঝোতা স্মারকের (এমওইউ) আলোকে সম্পন্ন হওয়া নগদ ক্রয় চুক্তির অধীনে এই তৃতীয় চালানের গম আমদানি করা হয়েছে। এই চুক্তি বাংলাদেশের খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থায় স্থিতিশীলতা আনতে এবং জরুরি চাহিদা পূরণে একটি দীর্ঘমেয়াদী সমাধান হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ তথ্য কর্মকর্তা ও জনসংযোগ কর্মকর্তা ইমদাদ ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয় যে, বাংলাদেশ সরকার টু সরকার (জিটুজি) ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে গম আমদানির একটি বৃহৎ কার্যক্রম শুরু করেছে, যা দেশের খাদ্য মজুদকে শক্তিশালী করবে এবং বাজারে স্থিতিশীলতা আনবে।
পূর্ববর্তী চালানসমূহ ও মোট আমদানির লক্ষ্য
এই সুবিশাল চুক্তির অংশ হিসেবে, এখন পর্যন্ত তিনটি পৃথক চালানে যুক্তরাষ্ট্র থেকে মোট ১ লাখ ৭৮ হাজার ৬৩৬ মেট্রিক টন গম দেশে এসে পৌঁছেছে। প্রথম চালানটি গত ২৫ অক্টোবর এসে পৌঁছায়, যেখানে ছিল ৫৬ হাজার ৯৫৯ মেট্রিক টন গম। এরপর, গত ৩ নভেম্বর দ্বিতীয় চালানে ৬০ হাজার ৮০২ মেট্রিক টন গম সফলভাবে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এই চলমান আমদানি প্রক্রিয়ার আওতায় মোট ৪ লাখ ৪০ হাজার মেট্রিক টন গম আমদানি করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে, যা দেশের খাদ্য ঘাটতি পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এই ধারাবাহিক আমদানি কার্যক্রম বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে সরকারের প্রতিশ্রুতিকে পুনর্ব্যক্ত করে।
নমুনা পরীক্ষা ও খালাস প্রক্রিয়া
মোংলা বন্দরের বহিঃনোঙরে পৌঁছানোর পর জাহাজে সংরক্ষিত গমের গুণগত মান যাচাইয়ের জন্য নমুনা পরীক্ষার কার্যক্রম অত্যন্ত সতর্কতার সাথে ইতোমধ্যে শুরু করা হয়েছে। অভিজ্ঞ কারিগরি দল গমের প্রতিটি ব্যাচ পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পরীক্ষা করছে, যাতে দেশের খাদ্য মানদণ্ড অনুযায়ী তা সম্পূর্ণ নিরাপদ ও উপযুক্ত হয়। এই পরীক্ষা সম্পন্ন হওয়ার সাথে সাথেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কর্তৃক দ্রুততার সাথে গম খালাসের জন্য যাবতীয় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। দ্রুত খালাস প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে প্রয়োজন অনুযায়ী গম সরবরাহ নিশ্চিত করা হবে, যা খাদ্য সরবরাহ চেইনকে মসৃণ রাখতে সহায়ক হবে।
