যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কানাডার সঙ্গে চলমান সমস্ত বাণিজ্যিক আলোচনা তাৎক্ষণিকভাবে বাতিলের ঘোষণা দিয়েছেন। এই গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণাটি তিনি তার নিজস্ব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যাল-এর মাধ্যমে জনসমক্ষে আনেন। বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম প্রধান বাণিজ্য অংশীদার কানাডার সঙ্গে এমন আকস্মিক সিদ্ধান্তে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমহলে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
কানাডার বিজ্ঞাপনে ট্রাম্পের অসন্তোষের কারণ
ট্রাম্পের এই কঠোর অবস্থানের মূল কারণ হিসেবে তিনি কানাডার একটি বিজ্ঞাপন প্রচারকে উল্লেখ করেছেন। তার মতে, এই বিজ্ঞাপনে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যানকে শুল্কের নেতিবাচক দিক সম্পর্কে কথা বলতে দেখা গেছে, যা ট্রাম্প প্রশাসনের বাণিজ্য নীতির পরিপন্থী। ডোনাল্ড ট্রাম্প তার পোস্টে দৃঢ়ভাবে উল্লেখ করেন, “কানাডার এই জঘন্য আচরণের জন্য তাদের সঙ্গে সমস্ত বাণিজ্যিক আলোচনা বাতিল করা হলো।” এটি স্পষ্টতই কানাডার বিরুদ্ধে তার ব্যক্তিগত অসন্তোষ এবং তার বাণিজ্য নীতির প্রতি কোনো ধরনের সমালোচনার প্রতি তীব্র বিরক্তির বহিঃপ্রকাশ।
ট্রাম্পের পূর্ববর্তী বাণিজ্যনীতি এবং কানাডার ওপর শুল্ক আরোপ
কানাডার সঙ্গে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্য সম্পর্ক বরাবরই টানাপোড়েনের মধ্য দিয়ে গেছে। তার প্রথম মেয়াদে তিনি কানাডীয় পণ্যের ওপর উল্লেখযোগ্য শুল্ক আরোপ করেছিলেন। এর মধ্যে ৩৫ শতাংশ শুল্ক ছিল কানাডা থেকে আমদানি করা বিভিন্ন পণ্যের ওপর। যদিও, তিনি ইউএসএমসিএ (USMCA) চুক্তির আওতায় আসা কিছু নির্দিষ্ট পণ্যের ক্ষেত্রে শুল্ক ছাড়ের অনুমতি দিয়েছিলেন, যা ছিল মেক্সিকো এবং কানাডার সঙ্গে একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি এবং নাফটা (NAFTA)-এর স্থলাভিষিক্ত।
তবে, এই চুক্তি সত্ত্বেও, ট্রাম্প প্রশাসন কানাডার নির্দিষ্ট কিছু খাতের ওপর আরও কঠোর শুল্ক আরোপে পিছপা হয়নি। বিশেষত, ধাতব পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক এবং অটোমোবাইল খাতের পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছিল, যা কানাডার অর্থনীতিতে বড় ধরনের প্রভাব ফেলেছিল। এই নতুন ঘোষণার ফলে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক আরও জটিলতার মুখে পড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে, এবং এর দীর্ঘমেয়াদী অর্থনৈতিক প্রভাব কী হতে পারে, তা নিয়ে বিশ্লেষকদের মধ্যে সংশয় তৈরি হয়েছে।
