নিউইয়র্কের আসন্ন মেয়র নির্বাচনের ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জোহরান মামদানির প্রচারণায় এক নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে যখন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা স্বয়ং তাকে ফোন করে সমর্থন ও সহযোগিতার প্রস্তাব দিয়েছেন। ৩৪ বছর বয়সী এই তরুণ প্রার্থীর জন্য এটি নিঃসন্দেহে একটি বিশাল রাজনৈতিক সমর্থন, যা তার নির্বাচনী প্রচারণাকে আরও গতিশীল করবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
গতকাল শনিবার, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা নিউইয়র্কের ডেমোক্র্যাট মেয়র প্রার্থী জোহরান মামদানিকে ব্যক্তিগতভাবে ফোন করেন। এই ফোনালাপে, ওবামা তরুণ এই প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারণার ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং নির্বাচনে জয়ী হলে তার পাশে একজন পরামর্শক হিসেবে থাকার মূল্যবান প্রস্তাব দেন। এই পদক্ষেপ ডেমোক্রেটিক পার্টির শীর্ষ নেতৃত্বের মধ্যে মামদানির ক্রমবর্ধমান প্রভাবেরই ইঙ্গিত বহন করে।
এই গুরুত্বপূর্ণ ফোনালাপের খবর সর্বপ্রথম প্রকাশ করে প্রভাবশালী দ্য নিউইয়র্ক টাইমস। পরবর্তীতে, মামদানির মুখপাত্রও বিষয়টি নিশ্চিত করেন, যা এই সংবাদের সত্যতা ও গুরুত্বকে আরও বাড়িয়ে তোলে। মামদানির মুখপাত্র ডোরা পেকেক জানান, ‘জোহরান মামদানি (সাবেক) প্রেসিডেন্ট ওবামার সমর্থনসূচক কথাবার্তাকে গভীর কৃতজ্ঞতার সঙ্গে গ্রহণ করেছেন। তাঁরা নিউইয়র্কে এক নতুন ধরনের রাজনীতি গড়ে তোলার গুরুত্ব নিয়েও দীর্ঘক্ষণ আলোচনা করেছেন, যা শহরের ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনার জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।’
উগান্ডায় জন্মগ্রহণকারী জোহরান মামদানি বর্তমানে নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের একজন নির্বাচিত আইনপ্রণেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ৪ নভেম্বরের আসন্ন মেয়র নির্বাচনের আগে পরিচালিত জনমত জরিপগুলোতে তিনি তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী, সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমোর চেয়ে বেশ কিছুটা এগিয়ে আছেন বলে দেখা গেছে। এটি তার জনপ্রিয়তা এবং ভোটারদের মধ্যে নতুন নেতৃত্বের প্রতি আকাঙ্ক্ষারই প্রতিফলন।
প্রসঙ্গক্রমে উল্লেখ্য, ডেমোক্রেটিক প্রাইমারিতে জোহরান মামদানির কাছে অপ্রত্যাশিতভাবে হেরে যাওয়ায় সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমো এখন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। অন্যদিকে, রিপাবলিকান দল থেকে মেয়র পদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন গার্ডিয়ান অ্যাঞ্জেলস সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা কার্টিস স্লিওয়া। এই ত্রিমুখী লড়াইয়ে মামদানির প্রতি ওবামার সমর্থন একটি গুরুত্বপূর্ণ টার্নিং পয়েন্ট হতে পারে।
গত ২৪ জুন অনুষ্ঠিত প্রাইমারি নির্বাচনে মামদানির ঐতিহাসিক ও বিস্ময়কর জয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের রীতিমতো চমকে দেয়। এই অভাবনীয় সাফল্যের পর থেকে তার মেয়র প্রার্থিতার পক্ষে প্রচার আরও গতি পায় এবং শক্তিশালী জনসমর্থন তৈরি হয়। ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রভাবশালী নেতাদের মধ্যেও অনেকেই, যেমন সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস এবং নিউইয়র্কের বর্তমান গভর্নর ক্যাথি হোকুল, তার প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করেছেন, যা তার বিজয়ের সম্ভাবনাকে আরও উজ্জ্বল করছে এবং তাকে মূল প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করছে।
