সম্প্রতি ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে টি-টোয়েন্টি সিরিজে হোয়াইটওয়াশ এবং তার আগে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে একই পরিণতি বরণ করার পর বাংলাদেশ ক্রিকেট দল ছিল নজিরবিহীন চাপের মুখে। এই ব্যর্থতার সিংহভাগ সমালোচনার তীর গিয়ে বিদ্ধ করছিল দলের সহকারী কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের দিকে। অবশেষে, সেই সমালোচনার মেঘের মাঝেই এলো নতুন খবর—বাংলাদেশের অন্যতম অভিজ্ঞ এই কোচ জাতীয় দলের দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন। আসন্ন আয়ারল্যান্ড সিরিজের পরই তিনি আর দলের সঙ্গে থাকছেন না।
গত বছরের ৫ নভেম্বর বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে (বিসিবি) যোগ দিয়েছিলেন সালাউদ্দিন। তার সঙ্গে বিসিবির চুক্তি ছিল ২০২৭ সালের বিশ্বকাপ পর্যন্ত, যা ছিল একটি দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা। তবে, ঠিক এক বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই “ব্যক্তিগত কারণ” দেখিয়ে তিনি এই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, যা অনেকের কাছেই অপ্রত্যাশিত ছিল।
ক্রিকেট বিষয়ক জনপ্রিয় ওয়েবসাইট ক্রিকবাজের সূত্র ধরে জানা গেছে যে, সালাউদ্দিন ইতিমধ্যেই বিসিবিতে তার পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। বিশ্বস্ত সূত্রে আরও জানা যায়, তিনি বর্তমানে তার ভূমিকাটি উপভোগ করতে পারছিলেন না। দেশের শীর্ষস্থানীয় এই স্থানীয় কোচ বিষয়টি নিজে নিশ্চিতও করেছেন, যা তার পদত্যাগের গুঞ্জনকে সত্যি প্রমাণ করেছে।
ক্রিকবাজের কাছে দেওয়া এক প্রতিক্রিয়ায় সালাউদ্দিন অত্যন্ত সংক্ষিপ্তভাবে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করে বলেন, “হ্যাঁ, আমি পদত্যাগ করছি।” এর বাইরে তিনি অবশ্য বিস্তারিত কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। ডেভিড হেম্পের বিদায়ের পর থেকেই সালাউদ্দিন জাতীয় দলের ব্যাটিং ইউনিটের প্রধান হিসেবে কাজ করছিলেন। কিন্তু দলের সাম্প্রতিক ধারাবাহিক ব্যর্থতা, বিশেষ করে টি-টোয়েন্টি এবং ওয়ানডে ফরম্যাটে বাজে পারফরম্যান্সের কারণে তিনি তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন।
আয়ারল্যান্ড সিরিজের জন্য নতুন ব্যাটিং কোচ এবং বিস্তারিত সময়সূচী
এমন পরিস্থিতিতে, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) আয়ারল্যান্ড সিরিজের জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছে। বিসিবি সাবেক ক্রিকেটার মোহাম্মদ আশরাফুলকে জাতীয় দলের ব্যাটিং কোচ হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে। এই নিয়োগ সালাউদ্দিনের শূন্যস্থান পূরণে বোর্ডের তাৎক্ষণিক উদ্যোগের ইঙ্গিত দেয় এবং আশরাফুলের মতো অভিজ্ঞ একজন খেলোয়াড়ের সংযুক্তি দলের মনোবলে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে আশা করা হচ্ছে।
অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশ সফরে আসছে আয়ারল্যান্ড ক্রিকেট দল। আগামী ৬ নভেম্বর তারা বাংলাদেশে এসে পৌঁছাবে। এই সফরে আইরিশরা বাংলাদেশ দলের বিপক্ষে দুটি টেস্ট এবং তিনটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলবে। এই সিরিজটি বাংলাদেশের জন্য সাম্প্রতিক ব্যর্থতা কাটিয়ে ওঠার একটি বড় সুযোগ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
সিরিজের প্রথম টেস্ট ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে ১১ থেকে ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত সিলেটে। এরপর ১৯ থেকে ২৩ নভেম্বর পর্যন্ত ঢাকার শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে দ্বিতীয় এবং শেষ টেস্ট ম্যাচটি। টেস্ট সিরিজ শেষে টি-টোয়েন্টি মহারণ শুরু হবে। চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে প্রথম দুটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে যথাক্রমে ২৭ ও ২৯ নভেম্বর। এরপর ২ ডিসেম্বর সিরিজের শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে, যার মাধ্যমে সফর শেষ করবে আয়ারল্যান্ড দল।
