নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র, একজন সুপরিচিত রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, সেলিনা হায়াৎ আইভী অবশেষে হাইকোর্ট থেকে জামিন লাভ করেছেন। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার আন্দোলনকালে সংঘটিত চাঞ্চল্যকর পোশাক শ্রমিক মিনারুল হত্যা মামলাসহ মোট পাঁচটি ভিন্ন মামলায় তাকে এই জামিন প্রদান করা হয়েছে। এই রায় তার দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ে এক উল্লেখযোগ্য মোড় এনেছে এবং স্থানীয় রাজনীতিতে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
হাইকোর্টের রায় ও মামলার প্রেক্ষাপট
গত ৯ নভেম্বর, রবিবার বিচারপতি এ এস এম আব্দুল মোবিন এবং বিচারপতি সগীর হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই গুরুত্বপূর্ণ আদেশ দেন। যে পাঁচটি মামলায় আইভী জামিন পেয়েছেন, তার মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত হলো পোশাক শ্রমিক মিনারুল হত্যা মামলা। এটি গত জুলাই মাসের গণঅভ্যুত্থানের সময় ঘটেছিল, যখন দেশজুড়ে ছাত্র-জনতার স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন চলছিল। এই আন্দোলন চলাকালীন মিনারুলের হত্যাকাণ্ড ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে এবং আইভীর বিরুদ্ধে মামলা তার রাজনৈতিক জীবনে বড় ধরনের প্রভাব ফেলে। এই জামিন তার জন্য সাময়িক হলেও বড় স্বস্তি বয়ে এনেছে, কারণ এটি তাকে কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পথ খুলে দিয়েছে।
গ্রেপ্তার ও বিচারিক প্রক্রিয়া
সেলিনা হায়াৎ আইভীর গ্রেপ্তার ছিল একটি নাটকীয় ঘটনা। গত ৯ মে নারায়ণগঞ্জ শহরের দেওভোগ এলাকায় অবস্থিত তার পৈতৃক বাড়ি ‘চুনকাকুটি’ থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। সে সময় একটি হত্যা মামলায় তাকে আদালতে হাজির করা হলে, আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এরপর, বিচারিক প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে, গত ২৭ মে তাকে মিনারুল হত্যা মামলায় দুই দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। রিমান্ড শেষে আবারও তাকে আদালতে উপস্থাপন করা হলে, আদালত তাকে পুনরায় কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এরপর থেকে তিনি কারাগারেই ছিলেন এবং তার আইনজীবীরা জামিনের জন্য উচ্চ আদালতে আবেদন করেন। দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়া শেষে, হাইকোর্ট তার জামিন মঞ্জুর করায় এই মামলার ভবিষ্যত নতুন দিকে মোড় নেবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই জামিন আদেশ কেবল আইভীর ব্যক্তিগত স্বস্তি নয়, বরং নারায়ণগঞ্জের রাজনৈতিক অঙ্গনেও এর প্রভাব সুদূরপ্রসারী হতে পারে।
