More

    ২০২৬ সালে ঈদ আর পূজায় কত দিন ছুটি থাকবে?

    অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ কর্তৃক ২০২৬ সালের সরকারি ছুটির তালিকা চূড়ান্ত অনুমোদন লাভ করেছে। এই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তটি দেশের সরকারি ও বেসরকারি কর্মজীবীদের মধ্যে স্বস্তি ও পরিকল্পনার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। গত বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে অবস্থিত প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে এই অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে, যা এই সিদ্ধান্তের গুরুত্ব আরও বাড়িয়ে তোলে।

    বৈঠক শেষে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সাংবাদিকদের বিস্তারিত তথ্য প্রদান করেন। তিনি জানান যে, আগামী ২০২৬ সালে সাধারণ ছুটি এবং নির্বাহী আদেশ মিলিয়ে মোট ২৮ দিন ছুটি থাকবে। এই ২৮ দিনের মধ্যে, দেশের প্রচলিত সাপ্তাহিক ছুটি হিসেবে ৯ দিন শুক্রবার ও শনিবার পড়েছে। অর্থাৎ, প্রকৃত কর্মদিবস থেকে কাটা যাওয়া ছুটির সংখ্যা আরও কম।

    গুরুত্বপূর্ণ উৎসবে দীর্ঘ ছুটি: স্বস্তির প্রত্যাশা

    নির্ভরযোগ্য সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, আগামী বছর প্রধান ধর্মীয় ও জাতীয় উৎসবগুলিতে দীর্ঘ ছুটির ধারা অব্যাহত রাখা হয়েছে, যা জনজীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে আশা করা হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে:

    • ঈদুল ফিতর: এই পবিত্র উৎসবে ৫ দিন ছুটি থাকবে।
    • ঈদুল আজহা: কোরবানির ঈদে কর্মজীবীরা পাবেন ৬ দিন ছুটি।
    • শারদীয় দুর্গাপূজা: সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান এই উৎসবে ২ দিন ছুটি থাকবে।

    উল্লেখ্য, চলতি বছরেও এই তিনটি বড় উৎসবে একই সংখ্যক দিন ছুটি ছিল। এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখার সিদ্ধান্ত গত বৃহস্পতিবারের বৈঠকেই চূড়ান্ত অনুমোদন লাভ করেছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কর্তৃক ২০২৬ সালের ছুটির প্রজ্ঞাপন শিগগিরই জারি করা হবে বলে জানা গেছে, যা সকলের জন্য আইনত কার্যকর হবে।

    কেন দীর্ঘ ছুটি? পূর্ব অভিজ্ঞতা ও জনস্বার্থ

    ছুটির এই বিন্যাস শুধুমাত্র সরকারি কর্মীদের জন্য নয়, বরং পুরো জাতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। চলতি বছরেও দুই ঈদে মোট ১১ দিন এবং দুর্গাপূজায় ২ দিনের দীর্ঘ ছুটি কার্যকর ছিল। এই দীর্ঘ ছুটির অভিজ্ঞতা অত্যন্ত ইতিবাচক ছিল। ঈদে ঘরমুখো মানুষের যাত্রা ছিল তুলনামূলকভাবে স্বস্তিদায়ক এবং রাস্তাঘাটে দুর্ঘটনার সংখ্যাও উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পেয়েছিল। এই সফল অভিজ্ঞতা থেকেই শিক্ষা নিয়ে আগামী বছরও একই সংখ্যক দিন ছুটি বহাল রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যা জননিরাপত্তা ও নির্বিঘ্ন যাতায়াত নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে।

    ছুটির বিস্তারিত বিন্যাস

    ২০২৬ সালের জন্য অনুমোদিত ছুটির বিন্যাসটি অত্যন্ত সুচিন্তিতভাবে করা হয়েছে, যাতে উৎসবের আনন্দ পরিপূর্ণভাবে উপভোগ করা যায়:

    • ঈদুল ফিতর: ঈদুল ফিতরের মূল দিনের সাথে এর আগে ও পরের দুই দিন মিলিয়ে মোট পাঁচ দিন ছুটি নির্ধারিত হয়েছে।
    • ঈদুল আজহা: ঈদুল আজহার মূল দিনের সাথে এর আগে দুদিন এবং পরে তিন দিনসহ মোট ছয় দিন ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। এটি সবচেয়ে দীর্ঘ একক উৎসব ছুটি।
    • শারদীয় দুর্গাপূজা: এই উৎসবে বিজয়া দশমীর দিনের পাশাপাশি তার আগের মহানবমীর দিনও ছুটি থাকবে, যা মোট দুই দিনের ছুটি নিশ্চিত করবে।

    ছুটির প্রকারভেদ: সাধারণ ও নির্বাহী আদেশ

    এই অনুমোদিত ছুটির মধ্যে আইনগতভাবে কিছু ভিন্নতা রয়েছে। প্রধান দুটি ঈদের মূল দিন এবং বিজয়া দশমীর দিনকে সাধারণ ছুটি হিসেবে গণ্য করা হবে। অন্যদিকে, ঈদের আগে ও পরের দিনগুলি এবং দুর্গাপূজার মহানবমীর দিন নির্বাহী আদেশ বলে ছুটি থাকবে। এই বিভাজন সরকারি ছুটির আইনগত কাঠামোকে প্রতিফলিত করে এবং প্রতিটি ছুটির ভিত্তি স্পষ্ট করে তোলে।

    Recent Articles

    Related Stories

    Leave A Reply

    Please enter your comment!
    Please enter your name here