বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে মাঠে গড়াতে যাচ্ছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) দ্বাদশ আসর। সব ঠিক থাকলে আগামী ১৯ ডিসেম্বর এই জমজমাট টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টের পর্দা উঠবে। ক্রিকেট ক্যালেন্ডারের অন্যতম আকর্ষণীয় এই ইভেন্টকে ঘিরে ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে তোড়জোড়, যার কেন্দ্রে রয়েছে খেলোয়াড় নিলাম ও ফ্র্যাঞ্চাইজি প্রস্তুতি।
বিপিএল নিলাম: নতুন তারিখ ও উন্মুক্ত প্রক্রিয়া
প্রাথমিকভাবে বিপিএলের নিলাম ১৭ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও, তারিখ পরিবর্তন করে আগামী ২১ নভেম্বর নির্ধারণ করা হয়েছে। এবার খেলোয়াড় নির্বাচনের প্রচলিত ড্রাফট পদ্ধতির পরিবর্তে উন্মুক্ত নিলামের মাধ্যমে দলগুলো তাদের পছন্দের খেলোয়াড়দের দলে ভেড়ানোর সুযোগ পাবে। এই পরিবর্তন নিঃসন্দেহে নিলামকে আরও প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ও আকর্ষণীয় করে তুলবে, যেখানে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো কৌশলগতভাবে সেরা খেলোয়াড়দের জন্য বিড করতে পারবে।
আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় দক্ষ কর্মীবাহিনী আনার উদ্যোগ
বিসিবি এবারের আসরকে আরও পেশাদার ও আন্তর্জাতিক মানের করে তুলতে বদ্ধপরিকর। এর অংশ হিসেবে, বিসিবি আন্তর্জাতিক মানের দক্ষ কোচিং ও সাপোর্ট স্টাফ আনার জন্য সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। বিসিবির একজন পরিচালক সংবাদমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছেন যে, তারা দেশের বাইরে থেকে অভিজ্ঞ ও দক্ষ ব্যক্তিদের আনার চেষ্টা করছেন, যা প্রতিটি ফ্র্যাঞ্চাইজিকে আরও শক্তিশালী ও সুসংগঠিত করবে। যদি কোনো কারণে আন্তর্জাতিক মানের কর্মী আনা সম্ভব না হয়, তবে বিকল্প হিসেবে সিলেট বিভাগের কয়েকজন দক্ষ ব্যক্তি রয়েছেন, তাদের নিয়োগের পরিকল্পনাও রয়েছে বিসিবির।
নিলামের সময়সূচী ও সাম্প্রতিক ফ্র্যাঞ্চাইজি চুক্তি
আগামী ২১ নভেম্বর বাংলাদেশ দলের একটি টেস্ট ম্যাচ থাকায়, বিপিএল অকশন দুপুর তিনটায় শুরু হবে। এতে করে খেলোয়াড় ও সংশ্লিষ্ট সকলের জন্য সময় ব্যবস্থাপনা সহজ হবে। এর আগে গত বুধবার গুলশানের নাভানা টাওয়ারে বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের এক গুরুত্বপূর্ণ সভার পর ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর মালিকানা চূড়ান্ত করা হয়েছে। এই চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে এবারের আসরের জন্য দলগুলোর মালিকানা পাকাপোক্ত করা হয়েছে, যা টুর্নামেন্টের স্থিতিশীলতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
চূড়ান্ত হওয়া ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিকানা ও দল পরিচিতি
এবারের আসরের জন্য পাঁচটি ফ্র্যাঞ্চাইজি তাদের মালিকানা চূড়ান্ত করেছে। এই দলগুলো এবং তাদের নতুন মালিকানা নিম্নরূপ:
- রংপুর রাইডার্স: বসুন্ধরা গ্রুপের ক্রীড়াঙ্গনের অন্যতম অংশ টগি স্পোর্টস আবারও রংপুর রাইডার্সের মালিকানা পেয়েছে।
- চিটাগং রয়েলস: চট্টগ্রাম ফ্র্যাঞ্চাইজির দায়িত্বভার গ্রহণ করেছে ট্রায়াঙ্গাল সার্ভিস।
- রাজশাহী ওয়ারিয়র্স: ঐতিহ্যবাহী রাজশাহী দলের মালিকানা লাভ করেছে নাবিল গ্রুপ।
- সিলেট টাইটান্স: সিলেট ফ্র্যাঞ্চাইজির স্বত্বাধিকারী হয়েছে ক্রিকেট উইথ সামি।
- ঢাকা ক্যাপিটালস: চ্যাম্পিয়ন স্পোর্টস (রিমার্ক-হারল্যান) ঢাকার শক্তিশালী ফ্র্যাঞ্চাইজির মালিকানা নিশ্চিত করেছে।
এই পাঁচটি দলই এবারের বিপিএল আসরে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে এবং শিরোপা জয়ের লক্ষ্যে লড়বে। নতুন মালিকানা ও নিলামের উত্তেজনার মাঝে, আসন্ন বিপিএল দ্বাদশ আসর যে ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য এক দারুণ বিনোদনমূলক ইভেন্ট হতে চলেছে, তা বলাই বাহুল্য।
