রাজধানী ঢাকায় সম্ভাব্য নাশকতা ও জননিরাপত্তা বিঘ্নিত করার অপচেষ্টা রুখে দিতে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি) এক বিশেষ অভিযানে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৪ ঘণ্টার নিবিড় অনুসন্ধানে ও অভিযানে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ এবং এর সহযোগী সংগঠনের ৪৩ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের গোয়েন্দা পুলিশের হেফাজতে নেওয়া হয়।
নাশকতার অভিযোগ ও গ্রেপ্তার
ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মো. তরিকুল ইসলাম আজ বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন যে, সম্প্রতি রাজধানীতে সংঘটিত বাসে অগ্নিসংযোগ এবং ককটেল বিস্ফোরণের মতো নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডে এই ৪৩ জন ব্যক্তির সরাসরি জড়িত থাকার সুনির্দিষ্ট তথ্যপ্রমাণ পাওয়া গেছে। এসব গুরুতর অপরাধের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং সেই মামলাগুলোতে তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হচ্ছে। তিনি আরও জানান, গ্রেপ্তারকৃতরা কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও এর বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের সক্রিয় সদস্য। এই গ্রেপ্তার অভিযান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এবং জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গোয়েন্দা বিভাগের কঠোর পদক্ষেপের অংশ।
পূর্ববর্তী অভিযান ও প্রেক্ষাপট
এটি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়; এর আগেও গত মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে আরও ৪৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছিল, যা চলমান বিশেষ অভিযানেরই ধারাবাহিকতা।
এই গ্রেপ্তার অভিযানের মূলে রয়েছে এক বিশেষ রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট। ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের’ সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে আজ রায় ঘোষণার দিন ধার্য ছিল। এই রায় ঘোষণার দিনটিকে ঘিরে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ‘ঢাকা লকডাউন’ কর্মসূচির ডাক দিয়েছিল। ঢাকাকে অচল করে দেওয়ার এই কর্মসূচিকে প্রতিহত করতে এবং যেকোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা ও নাশকতা প্রতিরোধে বিগত কয়েক দিন ধরেই আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো, বিশেষ করে পুলিশ প্রশাসন, সর্বোচ্চ সতর্ক ও কঠোর অবস্থানে ছিল। শহরের গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশপথ ও পয়েন্টগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছিল, যাতে কোনো গোষ্ঠী অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে না পারে।
