আসন্ন ফুটবল বিশ্বকাপের মহাযজ্ঞের প্রস্তুতি পর্বের এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে আজ, শনিবার, বাংলাদেশ সময় রাত ১০টায়, ফুটবল বিশ্ব এক উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচের সাক্ষী হতে চলেছে। শক্তিশালী আফ্রিকান দল সেনেগালের মুখোমুখি হবে ব্রাজিল, লন্ডনের সুপরিচিত ইমিরেটস স্টেডিয়ামে এই হাই-ভোল্টেজ প্রীতি ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে। এটি কেবল একটি প্রস্তুতির ম্যাচ নয়, বরং নিজেদের শক্তি ও দুর্বলতা যাচাইয়ের এক মোক্ষম সুযোগ, যেখানে সেলেসাওরা তাদের রণকৌশল ঝালিয়ে নেওয়ার সুযোগ পাবে।
এর আগে ২০২৩ সালে লিসবনে অনুষ্ঠিত এক প্রীতি ম্যাচে সেনেগালের কাছে ৪-২ গোলের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছিল ব্রাজিল। সেই পরাজয়ের স্মৃতি সেলেসাওদের জন্য এক শিক্ষা, যা আজকের ম্যাচে আরও সতর্ক থাকার বার্তা দেবে। সেনেগাল কোনো সহজ প্রতিপক্ষ নয়; বরং তারা আফ্রিকার অন্যতম সেরা ফুটবল শক্তি হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছে।
সেনেগালের শক্তি: আফ্রিকার সিংহদের চ্যালেঞ্জ
শক্তির বিচারে সেনেগালকে হালকাভাবে নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। দলটির অধিকাংশ ফুটবলার ইউরোপের শীর্ষ লিগগুলোতে খেলার দীর্ঘ অভিজ্ঞতা সম্পন্ন। তাদের স্কোয়াডে থাকা অনেক তারকা ফুটবলার শারীরিক সক্ষমতা ও দ্রুতগতির মিশেলে প্রতিপক্ষকে পরাস্ত করার ক্ষমতা রাখে। যদিও সাদিও মানে এবং কালিদু কাউলিবালি বর্তমানে সৌদি লিগে খেলছেন, ইউরোপের ফুটবল ময়দানে তাদের প্রভাব ছিল অনস্বীকার্য। এছাড়া, আক্রমণভাগে বায়ার্নের স্ট্রাইকার নিকোলাস জ্যাকশন দলের শক্তি অনেক বাড়িয়েছেন। উইংয়ে ইসমাইল সার এবং মধ্যমাঠে পাপে গুয়েরার মতো পরীক্ষিত খেলোয়াড়রা ইউরোপের ফুটবলপ্রেমীদের কাছে সুপরিচিত এবং ব্রাজিলের রক্ষণভাগের জন্য কঠিন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারেন।
সেলেসাওদের সম্ভাব্য রণকৌশল ও একাদশ
এই গুরুত্বপূর্ণ প্রীতি ম্যাচে সেলেসাওদের শুরুর একাদশে কিছু পরিবর্তন দেখা যেতে পারে, যেখানে কোচ ডন কার্লো তার কৌশলগত দূরদর্শিতা প্রয়োগ করে নতুন কিছু খেলোয়াড়কে বাজিয়ে দেখতে পারেন। গোলপোস্টের নিচে ম্যানসিটি ছেড়ে তুরস্কে যাওয়া গোলরক্ষক এদেরসন মোরালেসকে (ফেনারবাচে) ফিরতে দেখা যেতে পারে, যার প্রত্যবর্তন দলের রক্ষণে নতুন মাত্রা যোগ করবে।
রক্ষণভাগে, লেফট ব্যাকে মোনাকোর তারকা কায়ো হেনরিক এবার সুযোগ পেতে পারেন, যা দলের গতিশীলতা বাড়াবে। তবে রাইট ব্যাকে রিয়াল মাদ্রিদের এদের মিলিতাওকে পরীক্ষা করে দেখতে পারেন কোচ, যা তার ফর্ম ও ফিটনেস যাচাইয়ের একটি সুযোগ। সেন্ট্রাল ডিফেন্সে পিএসজির নির্ভরযোগ্য তারকা মার্কুইনোস এবং আর্সেনালের শক্তিশালী ডিফেন্ডার গ্যাব্রিয়েল মাঘালহায়েসের থাকার সম্ভাবনা বেশি, যা দলের রক্ষণে দৃঢ়তা আনবে।
মধ্যমাঠের স্তম্ভ হিসেবে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের অভিজ্ঞ তারকা কাসেমিরো ব্রাজিলের ভরসার নাম। তার সঙ্গে নিউক্যাসলের ব্রুনো গিমারেজকে দেখা যেতে পারে, যারা মধ্যমাঠের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে রাখতে সাহায্য করবেন। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের ম্যাথিউস কুনিয়াকে নাম্বার টেন বা প্লে মেকারের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা দেওয়া হতে পারে, যিনি আক্রমণের সূত্রপাত ঘটাবেন।
ফরোয়ার্ড লাইনে, ব্রাজিলের কোচ ডন কার্লো ইঙ্গিত দিয়েছেন যে চেলসির তরুণ প্রতিভা এস্তেভাও উইলিয়াম শুরুতে থাকবেন। আক্রমণে নেতৃত্ব দিতে দেখা যেতে পারে রিয়াল মাদ্রিদের দ্রুতগতির উইঙ্গার ভিনিসিয়াস জুনিয়রকে, যার ঝলকানি দেখার অপেক্ষায় সমর্থকরা। রিয়াল মাদ্রিদের রদ্রিগোও আক্রমণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন।
ব্রাজিলের সম্ভাব্য একাদশ:
- গোলরক্ষক: এদেরসন মোরালেস (ফেনারবাচে)
- রক্ষণভাগ: এদের মিলিতাও (রিয়াল মাদ্রিদ), মার্কুইনোস (পিএসজি), গ্যাব্রিয়েল মাঘালহায়েস (আর্সেনাল), কায়ো হেনরিক (মোনাকো)
- মধ্যমাঠ: কাসেমিরো (ম্যানইউ), ব্রুনো গিমারেজ (নিউক্যাসল), ম্যাথিউস কুনিয়া (ম্যানইউ)
- আক্রমণভাগ: রদ্রিগো (রিয়াল মাদ্রিদ), এস্তোভাও উইলিয়াম (চেলসি), ভিনিসিয়াস জুনিয়র (রিয়াল মাদ্রিদ – মূল তথ্য থেকে অনুমান করা হয়েছে যেহেতু আক্রমণভাগে নেতৃত্বের কথা বলা হয়েছে)
