More

    হাসিনার বিরুদ্ধে মামলায় শেষ দিনের যুক্তিতর্ক আজ

    মানবতাবিরোধী অপরাধের মতো গুরুতর অভিযোগের একটি সুদীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়ার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় আজ সমাপ্ত হতে চলেছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ বিচারাধীন এই চাঞ্চল্যকর মামলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ মোট তিনজনের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশন আজ তাদের শেষ দিনের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করবে। এই পর্ব শেষ হওয়ার পরই বহুল প্রতীক্ষিত রায় ঘোষণার জন্য দিন ধার্য করবে ট্রাইব্যুনাল, যা এই মামলার চূড়ান্ত পরিণতি নির্ধারণ করবে।

    বিচারিক প্রক্রিয়ার চূড়ান্ত পর্যায়

    গতকাল, বুধবার (২২ অক্টোবর), এই মামলার আসামিপক্ষের আইনজীবীগণ তাদের সবিস্তার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন সম্পন্ন করেন। আসামিপক্ষের বক্তব্য শেষ হওয়ার পর পরই প্রসিকিউশন তাদের যুক্তিখণ্ডনমূলক বক্তব্য তুলে ধরেছিল। তারই ধারাবাহিকতায় এবং বিচারিক স্বচ্ছতা বজায় রেখে, আজ প্রসিকিউশন তাদের চূড়ান্ত ও সর্বশেষ যুক্তিতর্ক পেশ করবে। এটি মামলার শুনানির একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যেখানে প্রসিকিউশন তাদের সব প্রমাণ ও সাক্ষ্যের ভিত্তিতে আসামিদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের সারসংক্ষেপ তুলে ধরে।

    আজ ট্রাইব্যুনালের এজলাসে প্রধান প্রসিকিউটর তার গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য তুলে ধরবেন। তার পাশাপাশি, এই মামলার আইনি গুরুত্ব বিবেচনা করে দেশের অ্যাটর্নি জেনারেলও তার নিজস্ব বক্তব্য উপস্থাপন করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। এই দুই শীর্ষ আইন কর্মকর্তার বক্তব্য মামলার পরবর্তী গতিপথ নির্ধারণে সহায়ক হবে।

    গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষ্যপ্রমাণ ও চাঞ্চল্যকর তথ্য

    এর আগে, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দায়ের করা এই মামলায় ‘জুলাই আন্দোলন’-এর শহীদ পরিবার, গুরুতর আহত ব্যক্তি, প্রত্যক্ষদর্শী চিকিৎসকসহ মোট ৫৪ জন সাক্ষী তাদের জবানবন্দি পেশ করেন। তাদের সাক্ষ্য থেকে জুলাই গণহত্যার ভয়াবহতা, নৃশংসতা, এবং তৎকালিন আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সংঘটিত গুম, খুন ও নির্যাতনের মতো নানা অমানবিক ঘটনার বিস্তারিত চিত্র উঠে আসে। এই সাক্ষ্যগুলো মামলার মেরিট গঠনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

    বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য, জুলাই-আগস্টের গণহত্যা চলাকালীন সময়ে পুলিশের তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন এই মামলায় রাজসাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেন। তার সাক্ষ্যদান ছিলো মামলার একটি মোড় ঘোরানো মুহূর্ত। তিনি গণহত্যার পেছনের অজানা ঘটনাগুলো উন্মোচন করেন এবং এই নৃশংসতার নির্দেশদাতা ও বাস্তবায়নের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের সুনির্দিষ্ট নাম প্রকাশ করেন। একজন শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তার এই ধরনের সাক্ষ্য মামলার গুরুত্ব ও বিশ্বাসযোগ্যতা অনেক বাড়িয়ে দিয়েছে।

    প্রসিকিউশন দৃঢ়তার সাথে উল্লেখ করেছে যে, এ পর্যন্ত যত সাক্ষ্যপ্রমাণ ও তথ্য ট্রাইব্যুনালে উপস্থাপন করা হয়েছে, তা পৃথিবীর যেকোনো সভ্য আদালতে আসামিদের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগসমূহ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করার জন্য যথেষ্ট। প্রসিকিউশনের এই আত্মবিশ্বাসী বক্তব্য মামলার চূড়ান্ত রায়ের প্রাক্কালে বিশেষ তাৎপর্য বহন করছে।

    Recent Articles

    Related Stories

    Leave A Reply

    Please enter your comment!
    Please enter your name here