ওয়ানডে সিরিজের তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা শেষে এবার ক্রিকেটপ্রেমীরা মেতে উঠবেন বাইশ গজের ক্ষুদ্রতম সংস্করণ, টি-টোয়েন্টি উন্মাদনায়। বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যে তিন ম্যাচের এই টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরু হতে যাচ্ছে। উত্তেজনাপূর্ণ এই ক্রিকেট যজ্ঞের প্রথম পর্ব ইতোমধ্যে সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে, যেখানে বাংলাদেশ দল ওয়ানডে ফরম্যাটে তাদের দীর্ঘদিনের ব্যর্থতার জাল ছিন্ন করে দারুণ এক সিরিজ জয় ছিনিয়ে এনেছে। এবার পালা ভিন্ন ফরম্যাটের, ভিন্ন চ্যালেঞ্জের।
টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের অপ্রতিরোধ্য যাত্রা
ওয়ানডেতে যেখানে বাংলাদেশ সংগ্রাম করেছে, সেখানে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে তাদের দৃশ্যপট সম্পূর্ণ ভিন্ন ও উজ্জ্বল। এই ফরম্যাটেই বর্তমানে বাংলাদেশ দল খেলছে তাদের সেরা ক্রিকেট। তরুণ ও অভিজ্ঞ খেলোয়াড়দের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এবং অধিনায়ক লিটন দাসের সুদক্ষ নেতৃত্বে টাইগাররা টানা চারটি টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ের গৌরব অর্জন করেছে। এই অপ্রতিরোধ্য ধারাবাহিকতা তাদের আত্মবিশ্বাসকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছে এবং এই সিরিজেও তারা নিজেদের সেরাটা উজাড় করে দিতে বদ্ধপরিকর।
আগামী সোমবার, ২৭ অক্টোবর, বন্দরনগরী চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে শুরু হবে বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচ। এর পর ২৯ ও ৩১ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবে সিরিজের বাকি দুটি রোমাঞ্চকর ম্যাচ।
চট্টগ্রামের উইকেট: যেখানে ব্যাট-বলের সমান লড়াই
মিরপুরের স্পিন সহায়ক মন্থর উইকেটে স্পিনারদের দাপট দেখে ওয়েস্ট ইন্ডিজ তাদের টি-টোয়েন্টি স্কোয়াডে হয়তো স্পিন আক্রমণের ওপর বিশেষ জোর দিয়েছিল। তবে, চট্টগ্রামের সাগরিকার উইকেটের চিরাচরিত চরিত্র তাদের সেই কৌশলকে পুনর্বিবেচনা করতে বাধ্য করতে পারে। প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী, সাগরিকার উইকেট বরাবরই ব্যাটিং সহায়ক হিসেবে পরিচিত, যেখানে ব্যাটসম্যানরা নিজেদের শট খেলতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন এবং বড় রানের সম্ভাবনা থাকে।
এই মাঠে পেসার ও স্পিনার উভয়ই নিজেদের জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা পেয়ে থাকেন, তবে সেটি মিরপুরের মতো একপেশে নয়। এখানে স্পিনারদের সফল হতে হলে গতি এবং বৈচিত্র্যের ওপর অধিক জোর দিতে হয়। বিগত দুই বছরে এই মাঠে বাংলাদেশ দুবার ২০০ রানের কোটা অতিক্রম করেছে, যা এই উইকেটের ব্যাটিং-বান্ধব চরিত্রের সুস্পষ্ট ইঙ্গিত দেয়। এমনকি তৎকালীন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১৫০-এর বেশি রান তাড়া করে জেতার রেকর্ডও বাংলাদেশের আছে এই মাঠেই। সুতরাং, মিরপুরের মতো মন্থর ও লো-স্কোরিং ম্যাচের পরিবর্তে, দর্শকরা এখানে এক উচ্চ-স্কোরিং এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক লড়াইয়ের সাক্ষী হবেন, এমনটাই আশা করা যায়। এই সিরিজটি নিঃসন্দেহে ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য এক দারুণ বিনোদনমূলক অভিজ্ঞতা নিয়ে আসবে।
