ফুটবল বিশ্বের নতুন বিস্ময় বালক লামিনে ইয়ামাল। মাত্র ১৮ বছর বয়সেই তিনি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন বৈশ্বিক ফুটবলের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র হিসেবে। তার ক্ষিপ্রতা, পায়ের কাজ এবং অসাধারণ প্রতিভা তাকে অল্প সময়েই নিয়ে গেছে শীর্ষ তারকাদের কাতারে, যেখানে তিনি একইসঙ্গে সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক প্রাপ্ত এবং সবচেয়ে জনপ্রিয় ফুটবলারদের একজন। বার্সেলোনার এই স্প্যানিশ উইঙ্গার এবার মাঠের বাইরের এক চমকপ্রদ খবরে শিরোনামে এসেছেন। জানা গেছে, তিনি বার্সেলোনা শহরে একটি বিলাসবহুল প্রাসাদসম বাড়ি কিনতে যাচ্ছেন, যার মূল্য ১ কোটি ১০ লাখ ইউরো (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১৫৬ কোটি ৬৭ লাখ টাকা)।
এক সময়ের পিকে-শাকিরার নীড়
এই বাড়িটি একসময় স্প্যানিশ ফুটবল কিংবদন্তি জেরার্দ পিকে এবং বিশ্বখ্যাত পপ গায়িকা শাকিরার ভালোবাসার নীড় ছিল। ২০১০ সাল থেকে শুরু হওয়া তাদের সম্পর্ক এবং ২০১২ সালে নির্মিত এই বাড়িতেই তারা দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করেছেন। এই যুগল আলাদা হয়ে যাওয়ার পর পরই এই ঐতিহাসিক বাড়িটি বিক্রির জন্য বাজারে তোলা হয়, যা এখন তরুণ ইয়ামালের নতুন ঠিকানা হতে চলেছে।
বিলাসবহুল সম্পত্তির বিস্তারিত বিবরণ
স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম এল পাইস এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, পিকে-শাকিরার পুরনো এবং ইয়ামালের ভবিষ্যৎ এই ঠিকানাটি ৩৮০০ বর্গমিটার বিশাল জায়গাজুড়ে বিস্তৃত। এই সুবিশাল ভূসম্পত্তিতে রয়েছে তিনটি সুসজ্জিত ভবন – একটি মূল বিলাসবহুল বাসস্থান এবং দুটি পৃথক গেস্ট হাউস বা সহযোগী আবাস। এছাড়াও, এতে আধুনিক সুযোগ-সুবিধার কোনো কমতি নেই। রয়েছে ইনডোর ও আউটডোর সুইমিং পুল, একটি সুপরিসর টেনিস কোর্ট, অত্যাধুনিক জিমনেসিয়াম, একাধিক দৃষ্টিনন্দন চত্বর এবং এমনকি একটি পেশাদার রেকর্ডিং স্টুডিও, যা একজন তারকার ব্যক্তিগত জীবনের চাহিদা পূরণের জন্য যথেষ্ট।
সম্পত্তির মূল্য এবং সংস্কারের পরিকল্পনা
প্রথমে, ২০২২ সালে যখন এই সম্পত্তি বাজারে আসে, তখন তিনটি ভবন মিলিয়ে এর দাম ধরা হয়েছিল ১ কোটি ৪০ লাখ ইউরো (প্রায় ২০০ কোটি টাকা)। তবে, পরবর্তীতে একটি ছোট ভবন বিক্রি হয়ে যাওয়ায় সম্পত্তির মোট মূল্য থেকে ৩০ লাখ ইউরো (৪২ কোটি ৭২ লাখ টাকা) কমানো হয়। ফলস্বরূপ, বর্তমানে এর মূল্য দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ১০ লাখ ইউরো, যা ইয়ামালকে আকর্ষণ করেছে। বর্তমানে অবশিষ্ট দুটি ভবনে রয়েছে ছয়টি শয়নকক্ষ এবং পাঁচটি আধুনিক বাথরুম। তরুণ ইয়ামাল এই সম্পত্তিটি ক্রয়ে অত্যন্ত আগ্রহী বলে জানা গেছে। তবে, তিনি নিজের পছন্দ এবং আধুনিক জীবনযাত্রার চাহিদা অনুযায়ী বাড়িটিকে নতুন করে সাজাতে চান। এল পাইস আরও জানিয়েছে, এই সংস্কার কার্যে তিনি উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অর্থ ব্যয় করতে প্রস্তুত। ফুটবল মাঠে একের পর এক রেকর্ড ভাঙার পাশাপাশি, ১৮ বছর বয়সী এই তারকা মাঠের বাইরেও নিজের জীবনের নতুন অধ্যায় শুরু করতে চলেছেন এই ঐতিহাসিক বাড়ির মাধ্যমে।
