More

    মাদ্রাসার আহত শিক্ষকদের দেখতে ঢামেকে এনসিপি নেত্রী তাসনিম

    দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা চাকরি জাতীয়করণের এক দফা দাবিতে আন্দোলনরত স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসার শিক্ষকদের সাথে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। রাজধানী ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এই অনাকাঙ্ক্ষিত সংঘাতের সূত্রপাত হয়, যা দ্রুত তীব্র আকার ধারণ করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশকে লাঠিচার্জ, সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান ব্যবহার করতে হয়, যার ফলস্বরূপ অন্তত পনেরো জন শিক্ষক আহত হয়েছেন। এই ঘটনা আবারও ইবতেদায়ী শিক্ষকদের বঞ্চনা ও তাদের ন্যায্য দাবির প্রতি প্রশাসনের উদাসীনতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।

    সংঘর্ষের সূত্রপাত ও পুলিশের বলপ্রয়োগ

    গত বুধবার (২৯ অক্টোবর) দুপুরের দিকে এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে। স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসার শিক্ষকরা তাদের চাকরি জাতীয়করণের সুনির্দিষ্ট দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে একটি অবস্থান কর্মসূচি পালন করছিলেন। কর্মসূচির একপর্যায়ে তারা একটি প্রতিবাদী মিছিল নিয়ে সচিবালয়ের দিকে অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা করলে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যরা তাদের পথরোধ করে। এসময় শিক্ষকদের সঙ্গে পুলিশের তীব্র ধস্তাধস্তি ও হাতাহাতি শুরু হয়, যা দ্রুত সময়ের মধ্যে এক ভয়াবহ সংঘর্ষে রূপ নেয়।

    উত্তপ্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এবং শিক্ষকদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশকে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হয়। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এ সময় বেপরোয়াভাবে লাঠিচার্জ করে। একই সাথে তারা একাধিক সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ এবং শক্তিশালী জলকামান ব্যবহার করে আন্দোলনকারীদের ওপর চাপ সৃষ্টি করে। পুলিশের এই কঠোর পদক্ষেপের ফলে ঘটনাস্থলে উত্তেজনা চরমে পৌঁছায় এবং বহু শিক্ষক ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়েন।

    আহতদের অবস্থা ও রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া

    পুলিশের বেপরোয়া লাঠিচার্জ, সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান নিক্ষেপের কারণে কমপক্ষে পনেরো জন ইবতেদায়ী শিক্ষক গুরুতর আহত হয়েছেন। আহতদের দ্রুত উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, যাদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে। এই ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়লে রাজনৈতিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।

    আহত শিক্ষকদের প্রতি সংহতি জানাতে এবং তাদের শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিতে ঘটনার দিন রাতে জাতীয় নাগরিক পার্টির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্য সচিব তাসনিম জারা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছুটে যান। এসময় তার সাথে দলের অন্যান্য নেতা-কর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন। তারা আহত শিক্ষকদের চিকিৎসা ও সার্বিক বিষয়ে খোঁজখবর নেন এবং সরকারের প্রতি এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান।

    আন্দোলনকারী সংগঠন ও তাদের দাবি

    মূলত স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা শিক্ষক ঐক্যজোট আন্দোলন বাস্তবায়ন কমিটি-এর ব্যানারে এই প্রতিবাদ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি আয়োজিত হয়েছিল। এই আন্দোলনে কমিটির আহ্বায়ক শামসুল আলম এবং সদস্য সচিব মোহাম্মদ আল আমিন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। এছাড়াও বাংলাদেশ স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা শিক্ষক সমিতির সভাপতি কাজী মোখলেছুর রহমানসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত অন্যান্য শিক্ষক নেতৃবৃন্দও কর্মসূচিতে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন। তাদের মূল ও প্রধান দাবি হলো স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসার শিক্ষকদের চাকরি জাতীয়করণ, যার মাধ্যমে তারা সরকারি সুযোগ-সুবিধা ও নিরাপত্তা লাভ করতে পারবেন।

    Recent Articles

    Related Stories

    Leave A Reply

    Please enter your comment!
    Please enter your name here