সম্প্রতি একজন স্বনামধন্য ইসলামি ব্যক্তিত্বের সম্ভাব্য বাংলাদেশ সফরকে ঘিরে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের একটি মন্তব্য বাংলাদেশের কূটনৈতিক মহলে আলোচনার বিষয়বস্তু হয়ে উঠেছে। ঢাকা এই সামগ্রিক পরিস্থিতি অত্যন্ত সতর্কতার সাথে পর্যবেক্ষণ করছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে একটি সুস্পষ্ট বার্তা প্রদান করা হয়েছে, যা দেশের পররাষ্ট্রনীতি এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গীকারের প্রতিফলন ঘটায়।
গতকাল শনিবার, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এস এম মাহবুবুল আলম সংবাদ সংস্থা বাসসকে দেওয়া এক বিবৃতিতে এই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, “ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র একজন বিশিষ্ট ইসলামি স্কলার বা ধর্মীয় ব্যক্তিত্বের সম্ভাব্য বাংলাদেশ সফর প্রসঙ্গে যে মন্তব্য করেছেন, তা আমাদের নজরে এসেছে এবং আমরা এর বিস্তারিত পর্যালোচনা করছি।” তার এই বক্তব্য ভারত-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের প্রেক্ষাপটে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ এবং উভয় দেশের মধ্যে চলমান কূটনৈতিক আলোচনার একটি অংশ।
আন্তর্জাতিক নীতি ও বাংলাদেশের অবস্থান
মাহবুবুল আলম তার বক্তব্যে আরও জোর দিয়ে বলেন, বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং সার্বভৌম রাষ্ট্রের মর্যাদা রক্ষায় অঙ্গীকারবদ্ধ। তিনি দ্ব্যর্থহীনভাবে উল্লেখ করেন, “আমরাও দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, কোনো দেশেরই অন্য কোনো দেশের আইনগতভাবে অভিযুক্ত অথবা বিচার এড়িয়ে পলাতক ব্যক্তিকে আশ্রয় দেওয়া উচিত নয়।” এই নীতিটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে বাংলাদেশের স্পষ্ট অবস্থান তুলে ধরে।
এই নীতি আন্তঃরাষ্ট্রীয় সম্পর্ক এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ঢাকা মনে করে, দেশগুলোর উচিত আন্তর্জাতিক অপরাধ দমন এবং বিচার নিশ্চিত করতে একে অপরকে সহযোগিতা করা, এবং কোনোভাবেই অপরাধীদের নিরাপদ আশ্রয়স্থলে পরিণত না হওয়া। এই সুদূরপ্রসারী অবস্থান বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ, যা আন্তর্জাতিক শান্তি, নিরাপত্তা ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় সক্রিয় ভূমিকা রাখে। বাংলাদেশ সর্বদা আন্তর্জাতিক রীতিনীতি মেনে চলতে এবং প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে বদ্ধপরিকর, যেখানে আইনের শাসন ও বিচার নিশ্চিত করাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়।
