More

    কারামুক্ত হলেন মুয়াম্মার গাদ্দাফির ছেলে

    দীর্ঘ প্রায় এক দশক ধরে লেবাননের কারাগারে বন্দি থাকার পর অবশেষে মুক্তি পেয়েছেন লিবিয়ার সাবেক স্বৈরশাসক মুয়াম্মার গাদ্দাফির ছেলে হানিবাল গাদ্দাফি। এক প্রলম্বিত আইনি জটিলতার অবসান ঘটিয়ে গত সোমবার, নভেম্বর মাসের ১০ তারিখ, দেশটির বিচার বিভাগীয় কর্তৃপক্ষ তাকে ৯ লাখ ডলারের বন্ডে জামিনে কারামুক্তি প্রদান করে। এই মুক্তি একদিকে যেমন একটি দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়েছে, তেমনই অন্যদিকে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে আন্তর্জাতিক মহলে।

    শর্তসাপেক্ষ মুক্তি ও মানবাধিকার সংস্থার নিন্দা

    যদিও হানিবাল গাদ্দাফি কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন, তবে তার উপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখা হয়েছে। অর্থাৎ, তিনি আপাতত লেবানন ত্যাগ করতে পারবেন না। তার বিরুদ্ধে চলমান বিচারিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত তাকে এই নিষেধাজ্ঞার অধীনে থাকতে হবে। এই শর্তসাপেক্ষ জামিনের ঘটনাকে লেবাননের মানবাধিকার সংস্থাগুলো তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। তাদের অভিযোগ, বিচারিক প্রক্রিয়া অসম্পূর্ণ রেখে একজন অভিযুক্তকে জামিন দেওয়া ন্যায়বিচারের পরিপন্থী এবং এটি মামলার গতিপথকে প্রভাবিত করতে পারে। মানবাধিকার কর্মীরা এই সিদ্ধান্তে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং পূর্ণাঙ্গ বিচার প্রক্রিয়ার দাবি তুলেছেন।

    মুসা আল-সদর মামলা: মূল অভিযোগ

    হানিবাল গাদ্দাফির বন্দিদশার সূত্রপাত ঘটে ২০১৫ সালে। লেবাননের আলোচিত শিয়া নেতা ও প্রভাবশালী ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব ইমাম মুসা আল-সদরের নিখোঁজ মামলায় তথ্য গোপনের অভিযোগে লেবানন কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। পরবর্তীতে তাকে সিরিয়া থেকে অপহরণ করে লেবাননে নিয়ে আসা হয় এবং সেখানেই তাকে আটক করে রাখা হয়। এই মামলাটি লেবাননের রাজনৈতিক ও ধর্মীয় ইতিহাসে অত্যন্ত সংবেদনশীল এবং গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত।

    ইমাম মুসা আল-সদর কে ছিলেন?

    ইমাম মুসা আল-সদর ছিলেন লেবাননের আমাল আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা এবং একজন অত্যন্ত প্রভাবশালী শিয়া ধর্মগুরু ও রাজনৈতিক নেতা। ১৯৭৮ সালে তিনি লিবিয়ার তৎকালীন শাসক মুয়াম্মার গাদ্দাফির সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে নিখোঁজ হন। তার নিখোঁজ হওয়াকে ঘিরে লিবিয়া ও লেবাননের মধ্যে দীর্ঘদিনের কূটনৈতিক টানাপোড়েন ও অস্থিরতা বিদ্যমান। লেবাননের শিয়া সম্প্রদায়ের কাছে তিনি একজন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্ব এবং তার অন্তর্ধান আজও রহস্যঘেরা। হানিবাল গাদ্দাফির বিরুদ্ধে অভিযোগ, তার কাছে এই নিখোঁজ সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য থাকতে পারে, যা তিনি প্রকাশ করছেন না। এই মামলার সমাধান লেবাননের জন্য একটি সংবেদনশীল বিষয় এবং এর চূড়ান্ত ফলাফল উভয় দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রেও তাৎপর্যপূর্ণ প্রভাব ফেলবে।

    Recent Articles

    Related Stories

    Leave A Reply

    Please enter your comment!
    Please enter your name here