দক্ষিণ কোরিয়ার ব্যস্ত বন্দরনগরী বুসানে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিন পিংয়ের মধ্যকার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও প্রতীক্ষিত শীর্ষ বৈঠকটি সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। দুই বৈশ্বিক পরাশক্তির রাষ্ট্রপ্রধানদের এই উচ্চ-পর্যায়ের আলোচনা আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে এবং বিশ্বজুড়ে এর ফলাফল নিয়ে ব্যাপক আগ্রহ সৃষ্টি করেছে।
প্রায় এক ঘণ্টা চল্লিশ মিনিট স্থায়ী এই गहन আলোচনা বিশ্ব অর্থনীতির দুই বৃহৎ খেলোয়াড়ের মধ্যেকার গভীর কৌশলগত ও ভূ-রাজনৈতিক বিষয়াবলি নিয়ে বিস্তৃত আলাপচারিতার ইঙ্গিত দেয়। উভয় নেতা সম্ভবত দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক, বাণিজ্যনীতি এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা সংক্রান্ত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দিক নিয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বৈঠকের সফল সমাপ্তির পর, দুই রাষ্ট্রপ্রধান যখন সম্মেলন কক্ষ থেকে বেরিয়ে আসেন, তখন তাঁদের চেহারায় একটি স্বস্তির ছাপ স্পষ্ট ছিল। তাঁরা উষ্ণ করমর্দনের মাধ্যমে একে অপরের প্রতি সৌজন্যতা প্রদর্শন করেন, যা তাঁদের ব্যক্তিগত বোঝাপড়া এবং কূটনৈতিক প্রটোকলের প্রতিফলন। এই ব্যক্তিগত মুহূর্তে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে শি চিন পিংয়ের কানে কিছু ফিসফিস করে বলতে দেখা যায়, যা তাঁদের মধ্যেকার কোনো তাৎক্ষণিক বার্তা বা ব্যক্তিগত মন্তব্যের ইঙ্গিত বহন করে।
এরপর একটি সম্মানসূচক কূটনৈতিক অঙ্গভঙ্গিতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প শি চিন পিংকে সিঁড়ি দিয়ে প্রথমে নেমে যাওয়ার সুযোগ করে দেন এবং নিজে তাঁর পেছনে ধীর পদক্ষেপে অনুসরণ করেন। এই দৃশ্যটি দুই নেতার মধ্যেকার পারস্পরিক শ্রদ্ধা বা সুদৃঢ় কূটনৈতিক সম্পর্ককে প্রকাশ করে। শীর্ষ দুই নেতা এরপর নিজ নিজ নির্ধারিত গাড়িতে আরোহণ করে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এশিয়া সফরের সমাপ্তি
এই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের পরপরই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সরাসরি বিমানবন্দর অভিমুখে যাত্রা করেন। তাঁর সুপরিচিত ব্যক্তিগত বিমান ‘এয়ার ফোর্স ওয়ান’-এ চড়ে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্যে উড়াল দেন, যা ছিল তাঁর এশীয় অঞ্চলের একটি বিস্তৃত ও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক সফরের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এই এশিয়া সফরের সূচনা হয়েছিল সপ্তাহের গোড়ার দিকে মালয়েশিয়া থেকে। সেখানে তিনি দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় আঞ্চলিক জোট (আসিয়ান)-এর ৪৭তম শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন, যা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও সহযোগিতার প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গীকারের একটি সুস্পষ্ট প্রতিফলন ছিল। মালয়েশিয়া থেকে তিনি জাপানে যান, এবং অবশেষে দক্ষিণ কোরিয়ায় এসে তাঁর এই কূটনৈতিক ব্যস্ততা শেষ হয়।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মেয়াদের একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়ে চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিন পিংয়ের সঙ্গে এটি ছিল তাঁর প্রথম মুখোমুখি বৈঠকগুলোর মধ্যে অন্যতম, যা দুই দেশের সম্পর্ক এবং বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে বিশেষ তাৎপর্য বহন করে। এই বৈঠক ভবিষ্যতে মার্কিন-চীন সম্পর্কের গতিপথ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
